‘অস্তিত্ব সংকটে’ পাবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগ, দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি

পাবিপ্রবি ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
পাবিপ্রবি ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন  © টিডিসি ফটো

শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব ও লাইব্রেরি সংকট নিরসন, অ্যানিম্যাল হাউজ প্রতিষ্ঠাকরণ, বোট্যানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠাকরণসহ ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।  শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন শুরু হয় এবং দুপুর ১টায় এটি শেষ হয়। 

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ফার্মেসি বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব, লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এগুলো প্রশাসনের জানা থাকলেও প্রশাসন সমস্যাগুলো সমাধান করার কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বিভাগে বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। যেটি বিভাগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করেই অনেকগুলো বিভাগ খোলা হয়েছে। ফলে সবগুলো বিভাগে নানা রকমের সংকট রয়েছে। আমরা এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। -উপাচার্য, পাবিপ্রবি

বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মারুফ আকন্দ বলেন, আমাদের বিভাগে শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবে সমস্যাগুলো অনেকদিনের। বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল ইতোমধ্যে আমাদের বিভাগে ভর্তি নিয়ে একটি আগামবার্তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষক সংকট, পাঁচটি ল্যাবরেটরি স্থাপন, প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখা, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি তৈরি করতে না পারলে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হতে পারবেন না। বিষয়টি নিয়ে আমরা এখন অস্তিত্ব সংকটে আছি।

মারুফ আকন্দ বলেন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি নিষেধাজ্ঞা আসার পরপরই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন ও সমস্যাগুলো নিরসনের জন্য শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের প্রশাসন এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে কোন কথা বলেনি।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমা বলেন, আমাদের সাতটা ব্যাচের জন্য তিনজন শিক্ষক। একজন শিক্ষক প্রতি ব্যাচে দুটি করে কোর্স নিয়েও সবগুলো কোর্স সম্পন্ন করতে পারছে না। আমাদের মাত্র একটা ক্লাসরুম আছে, এটা দিয়ে সাতটি ব্যাচের ক্লাস ঠিক করে করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

যে সমস্যাগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলেছেন; এটা শুধু আমাদের বিভাগের সমস্যা না। এমন সমস্যা প্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। -চেয়ারম্যান, ফার্মেসি বিভাগ

ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শরিফুল হক বলেন, যে সমস্যাগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলেছেন; এটা শুধু আমাদের বিভাগের সমস্যা না। এমন সমস্যা প্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমাদের সমস্যাগুলোর বিষয়ে জানিয়েছি। প্রশাসনে যারা আছেন তারা আন্তরিকতার সঙ্গে বিষয়গুলো দেখছেন। আমরা আশা করি, তারা সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান দেবেন। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তিনি ফার্মেসি বিভাগের সমস্যাগুলো নিরসনের কথা জানিয়েছেন।

অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করেই অনেকগুলো বিভাগ খোলা হয়েছে। ফলে সবগুলো বিভাগে নানা রকমের সংকট রয়েছে। কেবল আমাদের নয়, নতুন সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সংকট রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুততম সময়ে এসব সংকট কাটিয়ে ওঠার।


সর্বশেষ সংবাদ