বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগপ্রার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ

বশেমুরবিপ্রবি
বশেমুরবিপ্রবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষক নিয়োগপ্রার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী বশেমুরবিপ্রবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভালো ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক লাভ করেছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার অনেক আগে থেকেই স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবো৷ একারণে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়েই যখন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় আবেদন করি। ভাইভায় ভালো করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। পরে অনেকের কাছে শুনতে পাই বোর্ড মেম্বাররা আমার ভাইভার পারফরম্যান্সের প্রশংসা করেছেন। এটা আমার জন্য আনন্দের ছিল। এর কিছুদিন পরই আমার বাসায় ডিএসবি পাঠিয়ে ভেরিফিকেশন করানো হয়। আমি ভেবেছিলাম এটা নিয়োগ প্রক্রিয়ারই অংশ। কিন্তু পরবর্তীতে শুরু হয় বিপত্তি। আমার ব্যক্তিগত জীবন, ব্যক্তিগত সম্পর্ক এসব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। আমার কিছু আত্মীয়দের নিয়ে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়।’

এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগে মেধা, যোগ্যতা এবং ভাইভার ফলাফল সবচেয়ে গুরুত্ব পাওয়ার কথা, কিন্তু এখানে এগুলো বাদ দিয়ে অন্য সবকিছু নিয়েই আলোচনা হচ্ছে। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে ভাবিনি কখনও।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। অভিজিৎ সাহা নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, বশেমুরবিপ্রবি'র বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়েছে গত মাসের উনিশ তারিখ (১৯/০৬/২০২৩)। ক্যাম্পাসের একজন শিক্ষার্থী উক্ত নিয়োগে সুপারিশপ্রাপ্ত হতে চলেছেন সাংবাদিকসহ অনেকের কাছ থেকেই এইধরনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। বলা হচ্ছিল উক্ত প্রার্থী তার ভাইবা পার্ফরমেন্সে নাকি বোর্ডের  বিশেষজ্ঞ সদস্যসহ সকলের কাছে সুনাম কুড়িয়েছেন বলেও। বিষয়টি সত্য হলে এটি এই ক্যাম্পাসের জন্য খুবই আনন্দের অনুষঙ্গ।  কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হবেন আর বিপত্তি পিছু নিবে না তাতো হয় না! এই ধরনের প্রচার আড়ালে-আবডালে শুরু হওয়ার পর এবার শুরু হলো, আমাদের মাঝে থাকা নোংরা মানসিকতার অদ্ভুত খেলা। ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পোস্টমর্টেম শুরু হলো, সেখানেও দমানো গেল না। শুরু হলো তার শ্বশুরকুলের ময়নাতদন্ত। ভুল ব্যক্তিকে শ্বশুর হিসেবে দেখিয়ে সবদিকে বিপত্তি তৈরি করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেন জাতির শ্রেষ্ঠ বিবেকধারী কেউ কেউ।

এই শিক্ষার্থী আরো লেখেন, এই নোংরামির শেষ কোথায়?  আমরা আবার কবে সত্যিকার বিবেকধারী হয়ে উঠেবো? আমরা এর শেষ চাই, নিপাত যাক অশুভশক্তি। ন্যায় আর সত্যের চর্চায় পুনর্জাগরিত হোক প্রাণের ৫৫ একর।

ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা জানান, নিয়োগপ্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন এমনকি তার পরিবারও আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত কিন্তু তার নিয়োগের সুপারিশের বিষয়ে গুঞ্জন শুরুর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ  মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন যে, নিয়োগপ্রার্থীর শ্বশুর বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত।

এ বিষয়ে নিয়োগবোর্ডের এক্সপার্ট সদস্য জাহাঙ্গীরনগরের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবু দায়েন বলেন, আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল। বোর্ডে যিনি সবচেয়ে যোগ্য ছিলেন তাকেই সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের মন্তব্য পাওয়া যায় নি।


সর্বশেষ সংবাদ