দুদকের তদন্তে ঢাকা কমার্স কলেজে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২১, ১২:৩৫ AM , আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১, ১২:৩৫ AM
ঢাকা কমার্স কলেজের প্রশাসনের বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমিক ক্লাস কমিয়ে কোচিং, আলাদা অ্যাকাউন্টে কোচিংয়ের টাকা সংরক্ষণ, ভর্তি বাতিল করে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের পুনরায় ভর্তিসহ আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতির বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। সাত কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে হবে কলেজের অধ্যক্ষকে। মাউশির অফিস আদেশটি বুধবার (৬ জানুয়ারি) প্রকাশিত হয়।
জানা গেছে, টিউটোরিয়াল প্রোগ্রামে ২০১৮ সালে ১২ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি, অধ্যক্ষ থাকার পরও অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ, উপাধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম এবং নারী শিক্ষককে বাংলা বিভাগের প্রধানের যৌন হয়রানির ঘটনা ধামাচাপা দিতে পাঁচ জন সিনিয়র শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়ার পর দুদক এবং শিক্ষা অধিদফতর কলেজটির বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত শুরু করে।
দুদক সম্প্রতি মাউশিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা, অভিযোগের প্রমাণ তুলে ধরে শিক্ষা অধিদফতর কলেজটির অধ্যক্ষের কাছে সাত কর্মবিদসের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছে।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গভর্নিং বডি ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিং ফি নিয়ে শ্রেণি কক্ষেই কোচিং করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কেচিং ফি কত? জারিমানা আরোপের পদ্ধতি থাকবে কিনা? ভর্তি বাতিল ও পুনরায় অর্থের বিনিময়ে একই শিক্ষার্থীকে পুনরায় ভর্তি করা যাবে কিনা? এসব বিষয়ে গভর্নিং বিডির কোনও লিখিত অনুমতি কলেজ প্রশাসন দেখাতে পারেনি।
যদিও ফি ধার্য, জরিমান আদায়, অর্থের বিনিময়ে একই শিক্ষার্থীকে পুনরায় ভর্তি ইত্যাদি সকল পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ওপরে প্রয়োগ করা হয়েছে।
কোচিং থেকে সংগৃহীত অর্থ আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সংরক্ষণের ব্যবস্থা কলেজ প্রশাসনের কাছে গৃহীত না হওয়ায় এই খাতে হিসাবের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দুদকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কোচিং ক্লাসে মাসিক তিন দিন অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল হয়েছে, আবার সেই একই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে পুনরায় ভর্তি করা হয়েছে। অনুপস্থিততির জন্য জরিমানার অর্থও আদায় করা হয়েছে।
কোচিংয়ে সংগৃহীত অর্থের ১০ শতাংশ কলেজ ফান্ডে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এ ব্যাপারে আলাদাভাবে হিসাব সংরক্ষণের বন্দোবস্ত নেই।
এনসিটিবি প্রতি শিক্ষাবর্ষে যত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে, তুলনামূলকভাবে কলেজ প্রশাসন প্রতি অ্যাকাডেমিক বর্ষে তার চেয়ে অনেক কম সংখ্যক ক্লাস নিয়েছে। কলেজ প্রশাসন কোচিংকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে মূল অ্যাকাডেমিক ক্লাসের সংখ্যা ও সময় বার বার কমিয়ে ফেলেছে।