ঢাবি এসএম হল সংসদের প্রার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করল ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগের মারধরে রক্তাক্ত মো. ফরিদ হাসান
ছাত্রলীগের মারধরে রক্তাক্ত মো. ফরিদ হাসান  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এসএম হল সংসদের এক প্রার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে মো. ফরিদ হাসান নামে ওই ছাত্রকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন তিনি। ফরিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র।

এ ব্যাপারে ফরিদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘আমি রাত ১১টার দিকে রুমে ঘুমিয়ে ছিলাম। এসময় ছাত্রলীগের কয়েকজন লাঠি-সোটাসহ গিয়ে তাকে ডেকে মেসের ডাইনিংয়ে নিয়ে যায়। সেখানে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সাবেক নেতা মিজানুর রহমান পিকুলসহ হল কমিটির প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘তোর সাহস তো কম নয়, এখনো হলে থাকিস’ এই বলে ব্যাপক মারধর শুরু করে। সেখান থেকে মারতে মারতে হল গেটে নিয়ে গিয়ে বেরিয়ে যেতে বলে। এসময় তাকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যেতেও সাহস করেনি। পরে তিনি একাই হাসপাতালে যান।

ফরিদ জানান, হল সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা তাকে শাসিয়ে ও হুমকি-ধামকি দিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বলেন। একপর্যায়ে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘তাকে মারধরের সাথে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা যতদূর জানি তার রুমে মাদক পাওয়া গিয়েছিল এবং হলের প্রায় চারশো শিক্ষার্থী তাকে হল থেকে বের করে দেয়ার জন্য হল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল। পরে হল প্রশাসন তার রুমটি সিলগালা করে দেয়। সে এখন হলে থাকে না। কালকে হলে আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেছে বলে আমরা শুনেছি।’

এছাড়া মিজানুর রহমান পিকুলও সেখানে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর এ ব্যাপারেদ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে অমানবিকভাবে মারা হয়েছে। এমনকি হলের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থেকে তাকে মারধর করেছে। তাকে হাসপাতালে নিতেও কেউ সাহস করেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, হলে অছাত্র যারা থাকে তারাই নিয়মিত ছাত্রদের নির্যাতন করে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য আমাদের যা করা লাগে তাই করব।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’


সর্বশেষ সংবাদ