চিকিৎসকের চেম্বারে শারীরিক সম্পর্ক শিক্ষকের, ভিডিও ভাইরালের পর বিচার দাবি

নাটোরে চিকিৎসক ও শিক্ষিকার অবাধ মেলামেশার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়েছে
নাটোরে চিকিৎসক ও শিক্ষিকার অবাধ মেলামেশার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়েছে  © প্রতিকী ছবি

নাটোরে এক চিকিৎসক ও শিক্ষিকার অবাধ মেলামেশার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন রোম্বিয়া আক্তার শিখা নামে এক সেবিকা। শিখার অভিযোগ, তাদের অশ্লীলতায় সহযোগিতা না করায় ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয় তাকে। শিক্ষিকার অশ্লীলতার বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরাও অধ্যক্ষ ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

দুই অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, পশ্চিম আলাইপুর হাফরাস্তা এলাকার বাসিন্দা ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম লিপন এবং নাটোর সিটি কলেজের সমাজকল্যাণ বিষয়ের প্রভাষক নাজমুন নাহার সাথীর দু’টি অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ৪০ মিনিট ও ২৮ মিনিটের ভিডিও ছড়ানোর পর স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া  শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

গত ৪ আগস্ট রোম্বিয়া আক্তার শিখা লিখিত অভিযোগে বলেন, আমিনুল ও নাজমুন নাহার নাটোর জেনারেল হাসপাতালে অশ্লীলতায় মাতেন। ছয় বছর ধরে সহকারী সেবিকা হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা না করায় প্রথমে প্রকাশ্যে মারপিট করে ও জেলে পাঠানোর হুমকি দেয়। গত ৫ মার্চ পরিকল্পিতভাবে ইয়াবা দিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। অশ্লীলতায় ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরও তারা কীভাবে দায়িত্বে বহাল থাকেন? তিনি তাদের বিচার দাবি করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। কোনো শিক্ষক এমনটা করতে পারে তা কল্পনাই করা যায় না। কোথাও আমরা মুখ দেখানো যাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানে এমন সহকর্মী আছেন, তা ভাবতেই তাঁরা লজ্জা পাচ্ছেন।

অভিযুক্ত নাজমুন নাহার সাথী সাংবাদিকদের বলেন, লিপন ও তার মধ্যে চিকিৎসক-রোগীর সম্পর্ক। চিকিৎসার জন্য নিয়মিত তার চেম্বারে যেতেন। একপর্যায়ে দু’জনের সম্মতিতে দৈহিক সম্পর্ক হয়। এর ভিডিও কীভাবে হয়েছে তা জানেন না। অভিযোগকারী নারী সেবিকাকেও চেনেন না। কোনো একটি পক্ষ তার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এ অভিযোগ করছে।

আরো পড়ুন: চিকিৎসককে মারধর: ঢাবি ছাত্রদের শনাক্ত করার আহবান ঢামেক পরিচালকের

তবে এ বিষয়ে সাংবাদিকরা কথা বলার জন্য চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম লিপনের মোবাইল ফোনে কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। চেম্বারে গিয়েও তার দেখা পাননি। লিপনের ঘনিষ্টজন আলসান হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী শফিউল আলম বাবলু বলেন, মানুষের মুখমন্ডল পরিবর্তন করে ভিডিও তৈরি করা যায়। লিপনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তার সুনাম নষ্ট করতে ভিডিও তৈরি করে ভাইরাল হয়েছে।

নাটোর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, নাজমুন নাহারের বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ পেয়েছেন। শিগগিরই মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইসতিয়াক আহমেদ ডলার বলেন, বিষয়টি শুনেছেন। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সভা ডেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ