চোরাবালির মতো ডিপ্রেশন বেড়েই যাচ্ছে
চিরকুট লিখে আত্মহত্যা এসএসসি পরীক্ষার্থীর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ জুন ২০২২, ০৭:০৬ PM , আপডেট: ১১ জুন ২০২২, ০৭:৪৩ PM
নোয়াখালীতে নিজের শোয়ার ঘর থেকে মাহমুদুল হাসান ফাহিম (১৭) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের পাশে রাখা চিরকুট। উদ্ধারকৃত চিরকুটে ওই পরীক্ষার্থী হতাশায় আত্মহত্যার বিষয়ে লিখে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ শনিবার (১১ জুন) দুপুর বেলা ১২টার দিকে জেলার সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের পুরোনো সর্দার বাড়ি থেকে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
স্কুলশিক্ষার্থী ফাহিম পুরোনো সর্দার বাড়ির হারুন অর রশিদ বাবুলের ছেলে। সে স্থানীয় কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্র। সে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
উদ্ধারকৃত চিরকুটে লেখা ছিল— প্রিয় মা-বাবা আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দিও, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, আমার মৃত্যুর জন্য ডিপ্রেশনই দায়ী। চোরাবালির মতো ডিপ্রেশন বেড়েই যাচ্ছে, ক্রমাগত আমাকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। মুক্তির কোন পথ নেই। গ্রাস করে নিচ্ছে জীবন, নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আজ আমি বড্ড ক্লান্ত, এবার মুক্তি চাই এই জীবন থেকে বাঁচার জন্য মরতেছি, সবাই ক্ষমা করে দিও-ফাহিম।
পরিবার ও স্থানীয়রা বলছে, ফাহিমেরা দুই ভাই। ছোট ভাই বাবা-মায়ের সঙ্গে চট্টগ্রাম থাকে। জেঠাদের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে ফাহিম। কিন্তু গত কয়েক মাস থেকে মোবাইলে গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে সে। এসব ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে মোবাইলে তাকে বকাঝকা করে তার বাবা। শুক্রবার রাতে খাওয়ার পর নিজের শোয়ার ঘরে ঢুকে যায় ফাহিম। সকালে ঘরের ভেতর থেকে তার কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধারকৃত চিরকুটে আরও উল্লেখ রয়েছে, দোকানদার সোহাগ ভাই ১০০০ টাকা পাইব, লাস্ট কষ্ট করে এই টাকাগুলো দিয়া দিয়েন।
সেনবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সবুজ পাল বলেন, নিহত শিক্ষার্থী মোবাইলে বিভিন্ন গেমে আসক্ত হয়ে ডিপ্রেশন থেকে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।