জিহাদের বাবা বললেন— ‘এমন ছেলে আমি চাই না’

জিহাদ হাওলাদার
জিহাদ হাওলাদার  © সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় ভারতে জিহাদ হাওলাদার নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। দিল্লি এলাকায় অবৈধভাবে জিহাদ থাকতেন এবং সেখানে তিনি কসাই জিহাদ নামেই পরিচিত ছিলেন। জিহাদের স্ত্রীসহ পরিবারের দাবি, গত দেড় বছর ধরে সে কোথায় আছে, তা তারা জানতেন না।

দিঘলিয়ার বারাকপুর বাজারের পাশে একটি টিনশেড বাড়িতে থাকতেন জিহাদ। তিনি ও তার বাবা জয়নাল হাওলাদার রং মিস্ত্রির কাজ করতেন।

জিহাদের স্ত্রী মুন্নি বেগম বলেন, চার বছর তাদের বিয়ে হয়েছে। আড়াই বছরের একটি সন্তান আছে। প্রায় দেড় বছর আগে ঢাকা ও যশোরে দুটি মামলায় জড়িয়ে পড়ায় জিহাদ গা ঢাকা দেন। তখন যশোর থেকে একবার ডিবি পুলিশ বাড়িতে এসেছিল। জিহাদ বাড়ি ছাড়ার পর থেকে কোথায় আছে, তা আমরা জানি না।

তিনি বলেন, সবশেষ ৯ মাস আগে ফোন করে এক-দেড় মিনিট কথা বলে আড়াই বছরের ছেলে ও বাবা-মার খবর নিয়েছিল। কিন্তু কোথায় আছে তা বলেনি। এমপি আনার হত্যার মিশনে নেতৃত্ব দেওয়া শীর্ষ চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল কিনা তাও আমার জানা নেই।

ছেলে জিহাদের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ বাবা জয়নাল হাওলাদার। তিনি জানান, এলাকায় মারামারির ঘটনা থেকে তার ছেলে সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তবে এমন নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটাবে তা তিনি কোনোদিন ভাবেননি। 

জয়নাল হাওলাদার বলেন, ছেলেকে নিয়ে অনেকটা অশান্তিতে ছিলাম। অনেকবার সঠিক পথে ফেরাবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ছেলের পা জড়িয়ে ধরে খারাপ পথ থেকে ফিরে আসার আকুতি করেছি। স্থানীয়দের কারণে বেপথে গিয়েছে ছেলে। তবে তারা কারা? প্রশ্নে জয়নাল হাওলাদার বলেন, নাম বললে কালই আমাকে মেরে ফেলবে।

তিনি বলেন, জিহাদের সঙ্গে বহুদিন ধরে আমার কথা হয়নি। ঢাকায় একটি ঝামেলার পর জেলে ছিল। তার কারণে আমার পরিবার শেষ হয়ে গেছে। তার এই কর্মকাণ্ডে আমরা হতাশ। আমার ছেলে অপরাধী হলে তার বিচার হোক। এমন ছেলে আমি চাই না, যে ছেলের জন্য মা-বাবার মুখ থাকে না। এমন ছেলে না থাকাই ভালো।

এদিকে, এলাকার অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন যে এমন কাজ জিহাদ কীভাবে ঘটাতে পারে। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে এলাকাবাসী শাস্তিও দাবি করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল আকন্দ জানান, জিহাদ রং মিস্ত্রির কাজ করতো। এলাকায় সে নম্র ও ভদ্রভাবেই চলাফেরা করতো। কয়েক বছর আগে এখানে গ্রামের স্থানীয় রাজনীতির দুই গ্রুপের মারামারি ঘটনায় তার নামসহ গ্রামের অনেকের নামে মামলা হয়। তারপর থেকে সে নিখোঁজ।

দিঘলিয়া থানার ওসি বাবুল আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, জিহাদ হাওলাদারের বিরুদ্ধে এ থানায় ২০২৩ সালের ৮ জুন অস্ত্র মামলা ও ২০২০ সালের ২৯ মে ও ২২ এপ্রিল দুটি মারামারির মামলা রয়েছে। অনেকদিন সে আত্মগোপনে রয়েছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ