যুবককে আটকে চাঁদা দাবি, ছাত্র সমন্বয়কসহ গ্রেফতার ৫
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৩ PM , আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৩ PM

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এক যুবককে আটকে রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা সমন্বয়কসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মহিউদ্দিনের ছেলে ও ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল মামুন (২৫), একই এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মনিরুল ইসলাম আকাশ (২১), একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবু তাহেরের ছেলে পারভেজ হোসেন (৩০), ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে অহিদুল ইসলাম (২৪) এবং বাটইয়া ইউনিয়নের মো. সালাউদ্দিনের ছেলে ইউনুস হোসেন রাজু (২২)।
ভুক্তভোগী সফি উল্যাহ বাটইয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ করেন, তার ছেলে তাফসীরুল ইসলাম রাফসান (১৯)-কে সোমবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আটক রেখে অভিযুক্তরা দাবি করে, তারা তাকে মাদকের সঙ্গে আটক করেছে। এরপর রাফসানের মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে নিজেদের ডিবি ও সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে সফি উল্যাহর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে ছেলেকে মারধরের হুমকিও দেন তারা।
চাঁদার টাকা বাটইয়া ইউনিয়নের কৃঞ্চারটেক মসজিদের সামনে পৌঁছে দিতে বলা হয়। সফি উল্যাহ প্রাথমিকভাবে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে সেখানে যান। কিন্তু সঙ্গে প্রশাসনের কেউ আছে সন্দেহে অভিযুক্তরা স্থান পরিবর্তন করতে থাকেন। পরে তারা জানান, রাফসানকে মাইজদীতে নিয়ে গিয়ে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এতে সফি উল্যাহর সন্দেহ আরও বাড়ে। তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানান এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে অবহিত করেন।
পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা চাঁদা দাবির কথা স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ।
এ ঘটনায় সফি উল্যাহ কবিরহাট থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, “গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে কেবল আবদুল্লাহ আল মামুন আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তিনি জেলা সমন্বয়ক ছিলেন। বাকি চারজন আমাদের সংগঠনের কেউ নন। তবে মামুন প্রকৃতপক্ষে ষড়যন্ত্রের শিকার কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।”
কবিরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মঞ্জুর আহমদ বলেন, “চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। পাঁচজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”