ভোটকেন্দ্রে জামায়াত নেতার ছেলেকে গুলি, ৬ বছর পর মামলা
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৮ PM , আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৮ PM

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় একটি ভোটকেন্দ্রে গুলি চালানোর ঘটনায় দীর্ঘ ছয় বছর পর মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় থানায় গুলিবিদ্ধ শাহিন মিয়ার বাবা মো. আইয়ুব আলী এই মামলা করেন। মামলায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০ থেকে ৬০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের পরান বয়েজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভোট চলাকালে বেলা ১১টার দিকে ১৪ দল-সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে বিজয়ী করতে সাধারণ ভোটার ও এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়।
পরে লাঙ্গল মার্কায় সিল মারা শুরু করলে ভোটাররা প্রতিবাদ করেন। এ সময় আসামি মো. রুবেল মিয়া অবৈধ অস্ত্র দিয়ে শাহিন মিয়াকে গুলি করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে শাহিন প্রাণে বেঁচে যান।
ঘটনার পর থেকেই আইয়ুব আলী বিচার চেয়ে আসছিলেন, কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রভাবে মামলা হচ্ছিল না। অবশেষে গত ৩ এপ্রিল তিনি নিজেই থানায় গিয়ে মামলা করেন।
মামলার ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে শান্তিরাম ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শাহিনকে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ বি এম মিজানুর রহমান খোকন, আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজিত কুমার প্রামাণিক, আনিছুর রহমান ও মাওলানা আবুল হোসেনসহ ৩৪ জন নেতাকর্মীর নাম রয়েছে মামলায়।
বাদী মো. আইয়ুব আলী জানান, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির স্থানীয় প্রভাবের কারণে এত দিন মামলা করতে পারেননি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার ছেলে প্রাণে বেঁচে গেলেও আজও তার শরীরে গুলির ক্ষত রয়েছে। এই ছয় বছর ধরে শক্তিশালী ও প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ বুজে ছিলাম। এখন আর নয়, আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাব দোষীদের।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, বাদীর এজাহার পাওয়ার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এখন তদন্ত চলছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।