করোনায় নেই টিউশন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দূর্বিষহ জীবন
- আরিফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১০:৪৪ AM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৩:২২ PM
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে তা আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ স্কুল-কলেজ খুলবে সেটি নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারছেন না। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে একধরণের সংকট তৈরি হয়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়। শিক্ষার্থীরা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন৷
এদিকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ টিউশন করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালায়, কিন্তু করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের আয়ের একমাত্র পন্থাও বন্ধ। ফলে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন তারা। অন্যদিকে কোচিংয় ও টিউশনির জন্য অনেক শিক্ষার্থী শহরে মেস ভাড়া করে থাকেন। তবে করোনায় আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের মেস ভাড়াও দিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ হাসান মেহেদী বলেন, করোনার আগে টিউশন করে পরিবারে কিছুটা সহযোগিতা করতাম কিন্তু হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে টিউশন বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউন উঠে গেলেও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা না থাকার কারণে পড়ালেখার স্থায়িত্ব কমে গেছে। ফলে অভিভাবকদের কাছ থেকে টিউশনির বিষয়ে তেমন একটা সাড়া পাওয়া যায় নি। এই অবস্থা চলমান থাকলে আমার মতো যারা টিউশন করিয়ে পরিবারে সহযোগিতা করে তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
চবির আরেক শিক্ষার্থী ফাতেমা নাজনীন সেতু বলেন, আমি প্রাইভেট পড়িয়ে আমার পড়াশোনার খরচ চালাই। কিন্তু টিউশন হারিয়ে এখন খুব কঠিন পরিস্থিতিতে আছি। কারণ আমি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন সন্তান। আমার পরিবার আমার পড়াশোনার খরচ কিংবা সব খরচ বহনে সক্ষম নয়।
তিনি আরও বলেন, লকডাউনের সময় আমি গ্রামে ছিলাম। লকডাউন পরবর্তী সময়ে আমি জীবিকার খোঁজে শহরে শিফট করেছি। শহরের শিফট করার প্রধান কারণ যাতে আমি কোনোভাবে টিউশন পাই বা টাকা উপার্জন করার উপায় খুঁজে পাই কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় টিউশন মিলছে না। করোনার আগে মোটামুটি চিন্তামুক্ত জীবন কাটাচ্ছিলাম।কিন্তু এখন অনেক চিন্তা নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে, জীবিকা নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগরীর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানমুন জাহান সাগর বলেন, করোনার আগে টিউশন করেই মূলত পড়ালেখার খরচ চালাতাম। আমার প্রতি সেমিস্টারে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। যার সিংহ ভাগই আমি টিউশনের টাকা জমিয়ে পরিশোধ করতাম। কিন্তু করোনায় টিউশন হারিয়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে, এখন পড়ালেখার খরচ চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।