বাকৃবিতে গাছ কেটে দোকান স্থানান্তরের পরিকল্পনায় পরিবর্তন, প্রশাসনের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন

আব্দুল জব্বার মোড়ের দোকানপাট
আব্দুল জব্বার মোড়ের দোকানপাট  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে আব্দুল জব্বার মোড়ের দোকানপাট স্থানান্তর ও গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে, যা ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একদিকে গাছ কেটে দোকান স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছিল, তবে পরবর্তীতে সেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেট (কেবি কলেজ) থেকে ফসিল মোড় পর্যন্ত চার লেনের সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। এই সড়ক আব্দুল জব্বার মোড় হয়ে যাবে বলে সড়কের দুই পাশে দোকান স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। দোকান স্থানান্তরের জন্য প্রাথমিকভাবে রেললাইনের বিপরীতে অবস্থিত কেন্দ্রীয় মন্দির ও জিমনেশিয়ামের দুই পাশে স্থান নির্ধারণ করা হয়, এবং এর জন্য বহু পুরনো গাছ কাটা হয়।

তবে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শুধুমাত্র জব্বার মোড়ের এক পাশের দোকানগুলোই জিমনেশিয়ামের সামনের স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে, আর মোড়ের অপর পাশের দোকানগুলো বর্তমান অবস্থান থেকে সামান্য পেছনে সরিয়ে রাখা হবে। অর্থাৎ, যেখানে গাছ কাটা হয়েছিল, সেখানে আর কোনো দোকান স্থাপন করা হবে না।

এ সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং দোকানদারদের মধ্যে ক্ষোভ ও প্রশ্ন উঠেছে। তারা বলছেন, গাছ কাটার আগে কেন পুরো পরিকল্পনা নিশ্চিত করা হয়নি? বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়ালিদ হাসান বলেন, ‘‘গাছ কাটার আগে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেনি, মানববন্ধন এবং বিকল্প চিন্তার প্রস্তাবও উপেক্ষিত হয়েছে। এখন যদি দোকান নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়, তাহলে গাছ কাটা কেন হলো?’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীন ভয়েসের সভাপতি মো. বকুল আলী বলেন, ‘‘প্রশাসনের সিদ্ধান্ত তীব্র নিন্দনীয়। পরিকল্পনার পুনঃমূল্যায়ন না করে গাছ কাটা হলো, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। উন্নয়ন পরিকল্পনার নামে পরিবেশ ধ্বংস করা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’’

অন্যদিকে, দোকানদারদের মধ্যে এই পরিবর্তন নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। জব্বার হোটেলের মালিক মাহবুব আলম বলেন, ‘‘করোনার পর দোকান শুরু করেছি, এবং এখন আবার নতুন জায়গায় যেতে হচ্ছে। জায়গা না থাকা এবং প্রস্তুতির সময় কম দেওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’’

এদিকে, এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার হাবিব মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘‘গাছ কাটা হয়েছিল আগের কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, তবে নতুন কমিটি মন্দিরের সামনে দোকান বসানোর পরিকল্পনা বাতিল করেছে।’’ তিনি আরও জানান, গোলচত্বরের ডিজাইন বিকৃত হওয়ার আশঙ্কায় দোকানগুলো জিমনেশিয়ামের দিকে সরানো হয়েছে, এবং রাস্তার পশ্চিম পাশে থাকা দোকানগুলো ৫-৬ ফুট পেছানো হবে।


সর্বশেষ সংবাদ