প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে গুরুত্ব দিতে যে হবে তিন বিষয়ে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৩ PM , আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ AM
দেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম হওয়ায় এগুলোতে চান্স পাওয়া অনেকটা পরিশ্রমের। অনেকটা ভাগ্যেরও। তবে প্রতিবছরই ভর্তিচ্ছুদের একটি অংশ এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিজেরদের অবস্থান নিশ্চিত করে নিচ্ছেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে পড়ালেখা শেষ করে অবদান রাখছেন দেশে উন্নয়নে।
যেকোনো ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে অবশ্যই কলেজ লাইফের শুরু থেকেই নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে। মূল বইগুলো ফোকাসে রেখে পড়াশোনা করতে হবে। কারণ সকল প্রশ্ন মূল বই থেকেই আসে। তাই মূল বইয়ের উপর দক্ষতা থাকা আবশ্যক।
আর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ভালো করতে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও গণিত এই তিনটি বিষয়েই সমান গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে। পাশাপাশি নিজের প্রস্তুতি যাচাই ও ভুল চিহ্নিত করার জন্য নিয়মিত অনুশীলনমূলক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। তবেই ভালো প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব।
উচ্চতর গণিত
উচ্চতর গণিত বিষয়ের জন্য শুরু থেকেই নিজের পছন্দ মতো একটি মূল বই সেট করে নিতে হবে। একাধিক বইয়ের পেছনে না দৌড়ে, একটি বই পুরোপুরি ভালোভাবে পড়াটা বেশি কার্যকর। এক্ষেত্রে কেতাবউদ্দিন স্যারের বইটি বেশ ভালো একটি পছন্দ হতে পারে।
গণিতের ক্ষেত্রে প্রতি অধ্যায়ের সকল কনসেপ্ট ভালোভাবে শেখার পর অনুশীলনীর সকল প্রশ্ন নিজে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। সমাধান বই ব্যবহার করাকে আমি নিরুৎসাহিত করি। কেননা এটি ব্যবহারে স্টুডেন্টদের চিন্তা করার দক্ষতা কমে যায়। গণিতে ত্রিকোণমিতি ও ক্যালকুলাস খুব গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা এগুলো থেকে পরীক্ষায় অনেক প্রশ্ন আসে। জ্যামিতির সমস্যাগুলো চিত্র ব্যবহার করে সমাধান করার জন্যে উৎসাহিত করবো। অনুশীলনের ক্ষেত্রে মূল বই ফলো করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
পদার্থবিদ্যা
পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রেও একটি মূল বই সেট করে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ইসহাক স্যারের বইটি ভালো পছন্দ হতে পারে। ফিজিক্স পড়ার ক্ষেত্রে শুরুতে প্রতিটি অধ্যায়ের সকল কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে ফেলতে হবে এবং সকল সূত্র আত্মস্থ করতে হবে। পরবর্তীতে নিজের পছন্দসই বই থেকে ওই অধ্যায়ের সকল সমস্যা সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কেউ যদি প্রকৌশল ভর্তি পরীক্ষায় এগিয়ে থাকতে চায় তবে সে প্রশ্নব্যাংক ফলো করতে পারে, এটি তাকে এগিয়ে রাখবে অন্যদের চেয়ে।
এছাড়া যে সকল অধ্যায় পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত (যেমন- ভেক্টর, বল ও শক্তি) এগুলোতে একাধিক কনসেপ্টের সমন্বয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করতে জানতে হবে। তবে খুব বেশি কঠিন প্রশ্ন বা বিদেশি কোনো বই বা আইআইটির প্রশ্ন সমাধান করাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে নিরুৎসাহিত করি। কেননা এসবে অনেক সময় নষ্ট হয় ও আত্মবিশ্বাস কমে যায়।
রসায়ন
রসায়নের ক্ষেত্রেও মূল বই সেট করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমি গুহ স্যারের বইকে মূল বই এবং হাজারী স্যারের বইকে সহায়ক বই হিসেবে ব্যবহার করতাম। কেউ চাইলে এগুলো ফলো করতে পারে। রসায়নে প্রতিটি অধ্যায় পড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই শুরুতে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। কোনগুলি গুরুত্বপূর্ণ টপিক এটি বুঝানোর জন্য একজন ভালো শিক্ষক নির্বাচন করা দরকার।
কারণ আমাদের রসায়ন বইগুলোতে প্রতি অধ্যায়েই বেশ কিছু টপিক থাকে যেগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ। তাই গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো বেশি সময় নিয়ে, ভালোভাবে, বারবার করে পড়তে হবে ও মনে রাখতে হবে। গাণিতিক অংশগুলো নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে এবং তাত্ত্বিক অংশগুলো বারবার পড়তে হবে। প্রশ্নব্যাংক থেকে অনুশীলনের অভ্যাস করতে হবে। জৈব রসায়ন অধ্যায়টি বার বার করে পড়তে হবে কারণ এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন অধ্যায়।
কোচিং করা কতটা জরুরি?
অ্যাডমিশন প্রস্তুতির জন্যে নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষার জন্য কোচিং বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ক্লাসের চেয়ে পরীক্ষা গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত কোয়ালিটি প্রশ্নে অফলাইনে পরীক্ষা দিয়ে নিজের প্রস্তুতি যাচাই ও ভুলগুলো চিহ্নিত করা দরকার।