মাইগ্রেশন, মেধাতালিকা আর দীর্ঘসূত্রতা—গুচ্ছের তিন ইস্যুতে ক্ষোভ ভর্তিচ্ছুদের

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নানা মত ভর্তিচ্ছুদের
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নানা মত ভর্তিচ্ছুদের  © ফাইল ছবি

গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা, মেধাতালিকা প্রকাশ ও প্রাথমিক ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। কাগজপত্র জমা দেওয়া যাবে আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এই ভর্তি পরীক্ষার দীর্ঘ প্রক্রিয়া নিয়ে আগে থেকেই অসন্তোষ রয়েছে। পাশাপাশি মাইগ্রেশন, বাড়তি খরচ এবং মেধাতালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভর্তিচ্ছুরা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের ভর্তিবিষয়ক ফেসবুক পেজে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছে গুচ্ছ প্রক্রিয়া নিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। সেখানে প্রিতম নাথ বলেছেন, ‘এই নিয়মে ধ্বনিরা আরও ধ্বনি হবে, গরিবরা আরো গরিব হবে। গুচ্ছ বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপট তাদের রেজাল্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছে।। যারা ভালো নম্বর পেয়েছে তারা একাই তিন চারটা সিট দখল করবে প্রতি মেরিটে। আর কম নম্বরধারীরা শুধু অপেক্ষা করবে কখন তারা সিট ছাড়বে তারা ভর্তি হবে।’

কমরেড কুঞ্জ লিখেছেন, ‘সিস্টেম ঠিকই আছে। তবে আরও দ্রুত প্রসেস করে আগানো উচিত। যেহেতু সবই অনলাইন প্রসেস, কাগজ জমা দেওয়া ব্যাতীত। তাহলে তো দেরি হবার কথা নয়। যেমন - আজকে ভর্তি শেষ হলো, কালকের মধ্যে নতুন ওয়েটিং লিস্ট দিয়ে দেওয়া সম্ভব। আর মাইগ্রেশন প্রসেস নিয়ে। অনেক অনলাইন মাধ্যম বেশ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। যেমন- চারটা মাইগ্রেশনেই ভর্তি বন্ধ।’

শেখ আশরাফ বলেন, ‘মাইগ্রেশন সিস্টেম মোটামুটি ভালো। তবে সবচেয়ে ভালো হতো যদি একসঙ্গে সব ভার্সিটি আবেদন করা যেত সাত কলেজের মতো। কিন্তু গুচ্ছের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টাকার জন্য এরকমটা করে না।’

মো. খলিলুর রহমানের মতে, ‘বাজে সিস্টেম। একজন ছাত্র একাই ৭-৮টি সিট দখল করে আছে। মাইগ্রেশনেও ওয়েটিংদের লাভ হচ্ছে না। যারা সাবজেক্ট পাইছে মাইগ্রেশনে আবার তারাই পাবে।’

মনিরুল ইসলামের ভাষ্য, ‘আমার যে ভার্সিটিগুলোয় মেরিট আসে নাই আমি এখন ভর্তি না হলে কেন ওইগুলা থেকেও বাদ পড়ে যাব? এটা কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে?’

আরো পড়ুন: ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কাগজপত্র দেওয়া যাবে বিকেল পর্যন্ত

মোহাম্মদ শামিম বলেন, ‘মাইগ্রেশন দ্রুত আগানো উচিত।’ নুর বলেন, ‘বাজে মাইগ্রেশন সিস্টেম। যাদের বেশি মার্ক তারা সব ভার্সিটিতে সিট দেখল করে থাকবে। প্রতিবার মাইগ্রেশনে তারাই থাকবে। প্রতি মেরিটে অল্পসংখ্যক সিট খালি হবে, যার কারণে ৫৫-৬০ মার্ক যাদের আছে তারা ভোগান্তিতে পড়বে এবং ভার্সিটিগুলোতেও সিট পূরণ হতে এবং ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে অনেক সময় লাগবে। তাই কতৃপক্ষের উচিত মাইগ্রেশন সিস্টেম নিয়ে এখনই ভাবা।’

মো. হাবিবুর রহমান লিখেছেন, ‘৫৭ পেয়েও সাবজেক্ট পাইনি। কবে এই হতাশা শেষ হবে কে জানে।’ আনন্দ ইসলাম বলেন, ‘যে অবস্থা তাতে শেষ অবধি সিট ফাকা রেখেই না ভর্তি শেষ করে। ভাইভাতে অনেকগুলা ডাকা হোক, আর যারা ৮-১০টায় সিট পেয়েছে, তাদের যেন যেটা কনফার্ম করছে সেটাই ফিলাম দেখানো হয়। বাকিগুলো শূন্য আসন ঘোষণা করা হোক। এতে করে প্রক্রিয়া আগাবে।’

মো. নাহিদ হোসাইন বলেন, ‘কেউ ৫টায় চান্স পাচ্ছে আর কেউ দিনের পর দিন ওয়েট করছে। কবে অন্যরা সিট ছাড়বে আর সে চান্স পাবে। টেনশন নিয়ে অপেক্ষা করছে। আর প্রসেসিংটাও ঠিক টাইমে আগাচ্ছে না বলে মনে হয়। এর পরিবতন করা উচিত।’

আয়শা সিদ্দিকা ডিনা বলেন, ‘২ টাকাও জমাতে পারিনি। সব শেষ হয়ে গেছে। বাবার কাছ থেকে ৫০০ টাকা বেশি নিয়েছিলাম, তাও শেষ।’

ওয়াসিফ আল আবরারের মতে, ‘যারা প্রথম মেরিট এ সিট পেয়েছে তাদের প্রেক্ষাপটে অনেক ভালো সিস্টেম। তারা একটায় ভর্তি হচ্ছে, আরেকটার সিট দখল করে রাখছে। আর পরের যারা সাব্জেক্ট পায়নি, তারা তীর্থের কাকের মতই চেয়ে আছে। অথচ যার যেটায় খুশি ভর্তি হওয়ার পরই বাকি সিটগুলো ফাকা ঘোষিত হওয়া উচিত ছিল। কে শুনবে কার কথা, অনেক ভালো সিস্টেম।’


সর্বশেষ সংবাদ