রাবির হলে অভিযান চালিয়ে অবৈধ শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিলেন প্রাধ্যক্ষ 

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বিভিন্ন কক্ষে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের নামিয়ে সেই কক্ষে বৈধভাবে এলোট প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (১ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রথম ব্লক, দ্বিতীয় ব্লক ও তৃতীয় ব্লকে রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে অবৈধ ভাবে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের নামিয়ে সেই সিটে বিভিন্ন বিভাগের বৈধ শিক্ষার্থীকে উঠানো হয়েছে। এসময় অবৈধভাবে সিটে থাকা শিক্ষার্থীদের বিছানাপত্র অনত্র সড়িয়ে বৈধ শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিবেদনে লেখা পর্যন্ত ১১ জন বৈধ শিক্ষার্থীকে সিটে উঠাতে পেরেছেন হল প্রশাসন। বিভিন্ন কক্ষে মোট আঠারো জন শিক্ষার্থীকে সিটে উঠানোর কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে হলের প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হলের শৃঙ্খল রক্ষার্থে সব রকমের কাজ করতে চাই। বর্তমানে হলে সিট কেন্দ্রিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে৷ অবৈধভাবে হলে অবস্থা, সিট দখল ও বৈধ শিক্ষার্থী নামিয়ে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তারই প্রেক্ষিতে বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে হলে সকল শিক্ষার্থী বৈধভাবে অবস্থান করে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখে। 

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর ছবি তুলে জিতে নিন স্মার্টফোন-ট্যাবলেট

আঠারো জন শিক্ষার্থীকেই হলে উঠানোর কথা জানিয়ে প্রাধ্যক্ষ বলেন, আজ আঠারো জন শিক্ষার্থীকেই সিটে উঠানো হবে। অবৈধভাবে থাকা অনেকে কক্ষে তালা দিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। আমরা তাদের ডেকেছি, তারা যদি না আসে, তবে তালা ভেঙে বৈধ শিক্ষার্থীদের সিটে তোলা হবে। সারা রাত লাগলেও আমরা তাদের সিটে উঠানো হবে বলে জানান প্রাধ্যক্ষ।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌস মহল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে বৈধভাবে শিক্ষার্থীদের উঠানোর বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে কোন হলে অবৈধ কোন শিক্ষার্থী অবস্থান করতে না পারে। তাছাড়া হলের সিটে অবস্থা করা নিয়ে কোন ধরণের জটিলতা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য এসব অভিযান চালানো হচ্ছে। কেননা, হলগুলোতে বিভিন্ন মহলেন প্রভাব খাটিয়ে অনেক শিক্ষার্থী অবৈধভাবে অবস্থা করতে দেখা গেছে। ফলে হলের বৈধ শিক্ষার্থীরা সিট না পেয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে। আমরা চাই, সকলে বৈধভাবে নিজ নিজ সিটে অবস্থান করুক। হলের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এমন অভিযান চলমান থাকবে।

এরআগে, গত ২৩ জুন হল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা একটি নোটিশের মাধ্যমে হলে অবস্থান করা অনাবাসিক, বহিরাগত ও অন্য হলের শিক্ষার্থীদের ২৯ জুনের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কোনো শিক্ষার্থী তাঁর সমস্যার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ২৮ জুনের মধ্যে অভিভাবকসহ হল প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের সাঁড়া না পাওয়ায় হলে অবস্থান করা অবৈধ শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেন হল প্রশাসন। একই সাথে সেই সিটগুলো বৈধ শিক্ষার্থীদের উঠানো কথা জানান হয়।

উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্য, সিট দখল, মধ্যরাতে মারধর ও হল গেটে তালা দেয়ার মতো অনেক অভিযোগ রয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু প্রাধ্যক্ষসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন। তবে হলগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হলে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলার প্রমাণ পেলে বহিস্কারের ঘোষণা দেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ