ঢাবির প্রখ্যাত শিক্ষক অধ্যাপক শফি আর নেই
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২২, ১০:১০ AM , আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২২, ১১:০৮ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘স্যার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি গতরাত ১২ টা ১০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশের মৎস্য খাতে স্যারের অবদান অনেক। তিনি অত্যন্ত ভালো ও প্রখ্যাত একজন শিক্ষক ছিলেন। বিভাগের ভবন নির্মাণে তিনি প্রায় ৭০ লাখ টাকা দান করেছেন। স্যারের মরদেহ বিভাগের সামনে আনা হয়েছে। এখানে সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা হবে।’
১৯৭১ সালে অধ্যাপক শফি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্ত্রী সন্তানসম্ভবা থাকায় চট্টগ্রাম ছাড়েননি। একাধিকবার পাকিস্তানি হানাদারদের কাছ থেকে বেঁচে যান। তবে সান্তাহারে শহীদ হন মা, দুই ভাই ও তাঁদের স্ত্রীরা।
চট্টগ্রাম কলেজের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজ ও যশোরের এমএম কলেজে শিক্ষকতা করেছেন অধ্যাপক শফি। ১৯৬৯ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি করেন। পরে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৭৩ সালের জুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন।
চার বছরের ছুটি নিয়ে ১৯৭৮ সালে ইরাকের বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন মাছের ওপর। পরে দেশে ফিরে যোগ দেন নিজ বিভাগে। ১৯৯৮ সালে তিনি গড়ে তোলেন ‘অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড ফিশারিজ বিভাগ’। ওই বিভাগটি এখন নাম পাল্টে হয়েছে মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগ।
অর্থাভাবে ১৪ বছর ধরে একতলায় আটকে ছিল মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের ভবন নির্মাণের কাজ। ক্লাসরুম সংকট, ছোট গবেষণাগার ছাড়াও ঠিকমতো জায়গা হতো না শিক্ষকদের। এ অবস্থায় এগিয়ে আসেন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি। সারা জীবনের সঞ্চয়ের প্রায় ৭০ লাখ টাকা তিনি দান করেন বিভাগের ভবন নির্মাণে।