জাবির হল ১৫ মাস বন্ধ থাকার পরও দিতে হবে আবাসিক ফি

জাবির হল
জাবির হল  © ফাইল ফটো

আবাসিক হলে না থেকেই গত ১৫ মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আবাসন ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধের লক্ষ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর পার হয়েছে প্রায় ১৫ মাস। দীর্ঘ এ বন্ধে আবাসিক হলে অবস্থান করছেন না শিক্ষার্থীরা। তবে হলে অবস্থান না করেও নিয়মিত হলের আবাসিক ফি পরিশোধ করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

আবাসন ভাড়া পরিশোধ না করলে দেওয়া হচ্ছে না হল ক্লিয়ারেন্স, আটকে দেওয়া হচ্ছে সনদসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি আবাসিক হলে বর্তমানে অ্যালোটেড শিক্ষার্থী রয়েছেন ১২ হাজার ৮৫৪ জন। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রত্যেকের থেকে হলের আবাসন ভাড়া বাবদ মাসে আদায় করা হয় ২০ টাকা, বছরে ২৪০ টাকা। বছরে মোট শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা হয় ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬০ টাকা। যার পরিমাণ গত ১৫ মাসে দাঁড়িয়েছে ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ২০০ টাকা। এসব টাকার পুরোটা শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ।

তবে শিক্ষার্থীদের সনদসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নেওয়ার সময় হল ক্লিয়ারেন্সের প্রয়োজন পড়ে আর তখনই এ টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয় শিক্ষার্থীদের। অন্যথা মেলে না হল ক্লিয়ারেন্স। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরে শিক্ষার্থীদের থেকেও এসব টাকা নেওয়া হবে বলে জানান একাধিক হলের প্রাধ্যক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম রিহান বলেন, কোভিড ১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় বছর ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে নেই, হলে নেই, এমনকি তাদের পরীক্ষাও হচ্ছে না। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের আবাসন ফিসহ পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ যে টাকা নেওয়া হয়, তা নেওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক মনে করি। আমরা হলে থাকছি না, কিন্তু প্রতি মাসে আবাসন ফি বাবদ যে টাকা দেওয়ার কথা, তা মূল সনদ সংগ্রহের সময় পরিশোধ করতে হবে।

ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হক বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে এবং শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছেন না। এই পরিস্থিতিতে হল-সংক্রান্ত কোনো ফি আদায় সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অন্যায়। করোনায় পুরো দেশের সঙ্গে যখন শিক্ষার্থীদের পরিবারও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, এ সময় যেকোনো ধরনের ফি আদায় অমানবিক। উত্তোলিত অর্থ অবিলম্বে সবাইকে ফেরত দিতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোতাহের হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা নেওয়া হয়। আদায়কৃত টাকা নিজ নিজ হলের অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এই টাকা হলের উন্নয়নে খরচ করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুমতি সাপেক্ষে।

হলে না থেকেও শিক্ষার্থীদের থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করার ব্যাপারে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে নির্দেশনা এলে আমরা তাদের থেকে টাকা গ্রহণ করব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, এ ব্যাপারে আমরা এখনো ভাবিনি। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যাদের থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে, প্রয়োজনে তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তবে এখন আবাসন বাবদ শিক্ষার্থীদের টাকা পরিশোধ করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence