চারুকলায় ফের তৈরি করা হচ্ছে ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’

গড়ে তোলা হচ্ছে আবার স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি
গড়ে তোলা হচ্ছে আবার স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ “স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি” পুনরায় নির্মাণের দায়িত্ব শিল্পীদের ওপর অর্পণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে তিনি চারুকলার প্রাঙ্গণে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি পরিদর্শনকালে এ মন্তব্য করেন।

উপাচার্য বলেন, “আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সেখানে বাধা এসেছে। এ ধরনের কাজে বাধা আসেই, ষড়যন্ত্র থাকে। তবে মানুষের পরিশ্রম আর আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা এগিয়ে যাবো, শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে। এ কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা এখন একটি জাতীয় দায়িত্ব পালন করছি এবং চাই সবাই আমাদের পাশে থাকুক।”

চারুকলায় ইতোমধ্যেই প্রতিকৃতিটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ পৌঁছে গেছে। শিল্পীরা দ্রুততম সময়ে কাঙ্ক্ষিত মোটিফটি তৈরি করার চেষ্টায় ব্যস্ত রয়েছেন। ককশিট দিয়ে প্রতিকৃতি গড়ে তোলা সম্ভব কি-না, সে বিষয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, “এক মাস ধরে তৈরি করা প্রতিকৃতি তো একদিনে বানানো সম্ভব নয়। তবে শিল্পীরা কীভাবে, কতটা করতে পারেন, তা সময়ই বলে দেবে। আমরা বিষয়টি সম্পূর্ণ শিল্পীদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। তারা দফায় দফায় বসছেন, পরিকল্পনা করছেন। তারাই সবচেয়ে ভালো জানেন কী করবেন।”

এর আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চারুকলায় শোভাযাত্রার অগ্রগতি দেখতে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, “এই আয়োজনে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে স্যালুট জানাই। গত এক মাস তারা নিরলসভাবে কাজ করেছে। ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ ধ্বংস করে শিল্পীদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা হলেও আমি এসে দেখেছি—তাদের স্পিরিট দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আশা করছি, দেশবাসী এক অসাধারণ শোভাযাত্রা প্রত্যক্ষ করবে। সবাইকে আহ্বান জানাই, এই আয়োজনে অংশ নিতে।”

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’-তে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুড়ে যায়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক হোসেন কামাল এবং সহকারী প্রক্টর ড. এ কে এম নূর আলম সিদ্দিকী। সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল প্রাং কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।


সর্বশেষ সংবাদ