ঢাবিতে জুলাই আন্দোলনে হামলাকারী দেড়শ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

শনাক্তকরণ শেষ হবে ১৫ জানুয়ারি

জুলাই আন্দোলনে হামলাকারী ছাত্রলীগ
জুলাই আন্দোলনে হামলাকারী ছাত্রলীগ  © ফাইল ফটো

জুলাই গণঅভ্যূত্থানের মোড় ঘোরানো দিন গত বছরের ১৫ জুলাই। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এই হামলায় জড়িতদের শনাক্তকরণের কাজ শেষ হবে আগামী ১৫ জানুয়ারি। এখনও পর্যন্ত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর (ছাত্রলীগ নেতাকর্মী) বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন হামলাকারীদের শনাক্তকরণে গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাবি শিক্ষক কাজী মাহফুজুল হক।

চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে মাহফুজুল হক বলেন, আমরা প্রথমে প্রতিটি হল এবং বিভাগে চিঠি দিয়েছিলামে এরপর যারা তদন্ত কমিটির সামনে এসে কথা বলতে চায় আমরা তাদেরকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছি তাদের থেকেও আমরা তথ্য পেয়েছি। পরবর্তীতে আমরা কয়েকটি জায়গায় ব্যানার লাগিয়ে বসবো ছাত্ররা সরাসরি এসে আমাদের কাছে তাদের অভিযোগগুলো প্রমাণসহ দিতে পারবে। এভাবে কয়েকটি ধাপে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম শেষ হবে।

এখানে মবের শিকার হয়ে কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ শেষে সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা যখন পুর্ণাঙ্গ তালিকা দিবো। তখন বিভাগ ও হলের তালিকা ও শিক্ষার্থীদের তালিকা এক করে একটি একটি তালিকা দিবো, তখন মবের শিকার কোনো শিক্ষার্থী থাকলে তারা বাদ পড়ে যাবে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও মবের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা এমন অভিযোগ ও আমাদের কাছে আসছে।

এখনও পর্যন্ত কতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এটি একটি সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া তাই ধৈর্য ধরতে হবে।

যারা এতদিন বিভাগে মবের শিকার হয়ে ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তাদেরকে নিয়েও আলাদা ভাবে ভাবছে এই কমিটি এবং আমরা চাই না কেউ মবের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হোক বলে জানিয়েছেন কমিটি প্রধান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তদন্ত কমিটির মেয়াদ ১ মাস থাকলেও তারা একটু সময় চেয়েছেন কারণ অনেক তথ্য জমা পড়েছে সেগুলকে যাচাই বাচাই করতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে যতগুলো রিপোর্ট জমা পড়েছে ততসংখ্যক মানুষ আবার স্বাক্ষ্য দিচ্ছে না। সুতরাং তদন্ত কার্যক্রম যাতে দুর্বল না হয় তার জন্য তারা আরেকটু সময় নিচ্ছে।

মবের কারণে কেউ গণ আক্রোশের শিকার হচ্ছে কিনা, এ বিষয়ে তিনি বলেন, সেটার সুযোগ নেই। যারা অভিযোগ দিচ্ছে তারা কোনো বিভাগ বা হলের যার কারণে আমরা অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই সেটি বিভাগ ও হলে পাঠিয়ে মিলিয়ে নিচ্ছি। সুতরাং মবের শিকার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষক কাজী মাহফুজুল হককে আহ্বায়ক করে  সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আইন অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদিয়া নেওয়াজ রিমি, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী, শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা এবং সহকারী প্রক্টর মিসেস শেহরীন আমিন ভূঁইয়া।


সর্বশেষ সংবাদ