নগ্নপায়ে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ শিক্ষকের
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৩, ১২:২৪ PM , আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩, ১২:২৪ PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় এবং পুলিশের হামলার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থেকে আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানিয়েছেন এক শিক্ষক। নগ্নপায়ে দাঁড়িয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে তিনি এ কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় তাঁর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নেন। অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় ও পুলিশের হামলায় একজন অভিভাবক হিসেবে আমি শঙ্কিত, ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত। আমার ছাত্রের রক্তের দাগ এখনো মোছেনি, শরীরের ব্যথা এখনো মরেনি, মাথা চোখ শরীরের ব্যান্ডেজ এখনো খোলেনি, সেলাই এখনো কাটেনি, হাসপাতাল থেকে এখনো ছাড়েনি। এ অবস্থায় আমি তাদের ক্লাস নিতে পারিনা। আমার বিবেক বাঁধা দেয়।
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছে। অনেককে আবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমার শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। তাই আমি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও তাদের উপর হামলার প্রতিবাদস্বরূপ এখানে নগ্নপায়ে দাঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, আমার শিক্ষার্থীদের উপর অন্যায় করা হয়েছে। প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কিন্তু তাতে আদৌ কোনো কাজ হবে কিনা আমার জানা নেই। তাই আমি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. হাবিব রেজা বলেন, আমরা এখানে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে দাঁড়িয়েছি। আমাদের ওপর অন্যায় করা হয়েছে। আমাদের ভাইদের ওপর স্থানীয়রা যে আক্রমণ করেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাদের ইন্ধনে এত বড় সংঘর্ষ হয়েছে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না করলে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাব।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন ও আব্দুল মোকাররম বলেন, স্থানীয়রা আমাদের সঙ্গে আগে থেকেই খারাপ ব্যবহার করে আসছে। এ সংঘর্ষের জন্য তারাই দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী হাসপাতালে আছে। তাদের দায়ভার কে নেবে? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আজ দাঁড়িয়েছি।
উল্লেখ্য, বগুড়া থেকে মোহাম্মাদ নামের একটি বাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন এক ছাত্র। যাত্রাপথে ভাড়া নিয়ে তার সঙ্গে বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারের বাগবিতণ্ডা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে বাস কাউন্টারে এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।