শিক্ষা দিবসের ৬০ বছর পূর্তি: ঢাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সমাবেশ 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট  © টিডিসি ফটো

১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবসের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ছাত্র সমাবেশ, মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। পরবর্তীতে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর ১০ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করে তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সকাল ১১:৩০ টায় সমাবেশটি শুরু হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আজ থেকে ৬০ বছর আগে সার্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক একই পদ্ধতির শিক্ষার যে দাবি ছাত্র সমাজ উত্থাপন করেছিল; সেই দাবির স্বপক্ষে প্রাণ দিয়ে ছিলেন বাবুল, মোস্তফা, ওয়াজিউল্লাহ, সুন্দর আলীসহ নাম না জানা বহু শহীদ। স্বাধীন দেশে আজও সেই শিক্ষা কুক্ষিগত করে রেখেছে ধনিক শ্রেণী। স্বাধীন দেশে ৫১ বছরে নানা নামের শাসক শাসন করেছেন। কিন্তু শিক্ষা সম্পর্কিত রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। আজও শিক্ষাকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত করা হচ্ছে, হেফাজতের দাবি মেনে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক থেকেই শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িকীকরণ। মহল্লায় মহল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে গড়ে তোলা হয়েছে সার্টিফিকেট বিক্রয় কেন্দ্র, অপরদিকে শিক্ষার মান হয়েছে ভুলন্ঠিত। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইউজিসির কৌশলপত্র অনুযায়ী কমিয়ে আনা হচ্ছে বরাদ্দ। হলগুলো ক্ষমতাসীন সংগঠন ছাত্রলীগের দখলে। সেখানে তারা টর্চার সেল বানিয়ে, গেস্টরুম-গণরুমে ছাত্র নির্যাতন করে, জোর করে মিছিল মিটিং এ নিয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে কায়েম করেছে চূড়ান্ত ত্রাসের রাজত্ব। তার বিপরীতে আজ আদর্শবাদী ও বিপ্লবী ধারার রাজনীতিকে শক্তিশালী করা ছাড়া অবস্থা পরিবর্তনের দ্বিতীয় কোন পথ খোলা নেই।

আরও পড়ুন: একইদিনে দুই ভর্তি পরীক্ষা, বিপাকে ভর্তিচ্ছুরা

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, শিক্ষা দিবস আমাদেরকে শিখিয়ে গেছে ছাত্রদের আন্দোলনে যেমন পাশে দাঁড়ায় শ্রমজীবী জনতা। তেমনি শ্রমজীবী জনতার ন্যায়সংগত দাবির পাশেও আজ ছাত্রদেরকে দাড়াতে হবে। শাসকশ্রেণী চায় শিক্ষা দিবসের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে। তাই শিক্ষা দিবস নিয়ে আজ মূলধারায় কোন আলাপ আলোচনা নেই। যুবসমাজকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখে রাজনীতি সচেতন, অধিকার সচেতন না হলেই শাসকশ্রেণীর লাভ। শাসকশ্রেণীর এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে চলমান স্বৈরতন্ত্র, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের আন্দোলনকে বেগবান করা ছাত্র সমাজের ঐতিহাসিক দায়িত্ব।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমরেড নিখিল দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি রায়হান উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রাজীব কান্তি রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক সুলতান আক্তার, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সুস্মিতা মরিয়ম, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি অনিক কুমার দাস, গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি হারুন অর রশীদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিনা মুর্মু প্রমুখ। 

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ক্যাম্পাসের কলা ভবন প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনার ও দোয়েল চত্ত্বর হয়ে প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। অতঃপর দুইজন প্রতিনিধি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ