তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে?

  © ফাইল ছবি

পবিত্র রমজান মাসে যেসব মুসলমান রোজা রাখেন, তারা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছুই মুখে দেন না। বিরত থাকেন শারীরিক সম্পর্ক থেকেও। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) থেকে এ বছরের রোজা শুরু হচ্ছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের বিভিন্ন বয়সের বেশিরভাগ মানুষও এসময় মাসব্যাপী রোজা রাখবেন।

মহান আল্লাহ তাআলা এ রোজা প্রাপ্তবয়স্ক ও শারীরিক-মানসিকভাবে সুস্থ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ করেছেন। তবে রোজা শুদ্ধ হওয়ার জন্য তারাবির নামাজের কোনো সম্পর্ক নেই। তারাবির নামাজ না পড়লে রোজা মাকরুহও হবে না। 

কারণ আল্লাহ তাআলা বলেছেন— ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)

এটিই হচ্ছে মূল নির্দেশ। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বান্দার ওপর রোজা ফরজ করার এটিই বিধান। এখানে তারাবির নামাজকে শর্ত করা হয়নি। তবে, রাতের ইবাদতগুলোর মধ্যে এশার নামাজ ফরজ, বিতর ওয়াজিব; অন্যান্য নফল বা সুন্নতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে মর্যাদা দান করেছেন।

যে যত বেশি আমল করবেন, তার তত কল্যাণ ও মার্যাদা। সুতরাং, কেউ যদি তারাবির নামাজ না পড়ে দিনের বেলা রোজা রাখেন, তাহলে তার রমজানের ফরজ রোজা আদায় হয়ে যাবে ঠিক, কিন্তু সুন্নত ও তারাবি নামাজের মাধ্যমে তার যে মর্যাদা পাওয়ার সুযোগ ছিল, তা থেকে তিনি বঞ্চিত হলেন।

আর কেউ যদি ২০ রাকাত তারাবির নামাজ না পড়ে ৮ বা ১২ রাকাত পড়েন, তাহলে তিনি ৮ বা ১২ রাকাতের সওয়াবই পাবেন, ২০ রাকাতের যে সওয়াব, তা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করলেন। এক্ষেত্রে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে, এ দুনিয়ার নামাজ-রোজা ইত্যাদি ইবাদতের অর্জন দিয়ে আখেরাতের সীমাহীন জীবন অতিবাহিত করতে হবে। কাজেই রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেক আমল কম করার চেয়ে বেশি করার প্রতিযোগিতা করাই শ্রেয় হবে।

এছাড়াও মনে রাখা জরুরি, আল্লাহ তাআলা তারাবির নামাজের বিধান দিয়েছেন রমজান মাসেই। তারাবি অন্য সময়ে পড়া হয় না। তাই তারাবির নামাজ বাদ দেওয়া বা কম পড়া এতে কোনো বিশেষ উপকার নেই। বরং হাদিসে এসেছে— ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজানে তারাবির নামাজ আদায় করেন, তার অতীতের গুনাহগুলো আল্লাহপাক ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি: ৩৬)

তাছাড়া শরয়ী ওজর ছাড়া তারাবির নামাজ ছেড়ে দেওয়া মাকরুহে তাহরিমি। তাই অবহেলাবশত তারাবির নামাজ না পড়া মুমিন মুসলমানের অনুচিত। (কিতাবুল মাবসুত: ২/১৪৫, রদ্দুল মুখতার: ১/৬৫৩, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৫/৭৭)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তারাবির নামাজের মতো রমজানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি আমলের প্রতি আন্তরিকতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি করে দিন। আমিন।


সর্বশেষ সংবাদ