দুর্বল ব্যক্তিত্বের শিক্ষকদের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয় সরকার

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কনভেনশন-২০২৩ এ বক্তারা

প্রথম অধিবেশনের পরে একটি র‍্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে
প্রথম অধিবেশনের পরে একটি র‍্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে  © সংগৃহীত

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার দুর্বল ব্যক্তিত্বের শিক্ষকদের উপাচার্য পদে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসন নেই। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে স্বায়ত্তশাসনের কথা থাকলেও সেখানে ‘আয়ত্ত শাসনের’ ব্যবস্থা রেখে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (০২ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কনভেনশন-২০২৩’-এ বক্তারা এসব কথা বলেন।

দিনব্যাপী এই কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী। এর আগে এদিন কনভেনশনের উদ্বোধন ও প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত। কনভেনশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

কনভেনশনে বক্তারা উচ্চশিক্ষার বেসরকারীকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ, সংকোচন ও দুশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রথম অধিবেশনের পরে একটি র‍্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। দ্বিতীয় অধিবেশন বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টায় কনভেনশন শেষ হয়।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘ইউজিসি কৌশলপত্র দিয়েছে। এটাই আমরা জানি। কিন্তু এ কৌশলপত্র দিয়েছে মূলত বিশ্বব্যাংক।’

আরও পড়ুন: নতুন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য পেল পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়

তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মানে সর্বজনের বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বজনের টাকা দিয়ে যেন শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করতে পারে তার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রেও সর্বজনের ভূমিকা থাকতে হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে স্বায়ত্তশাসনের কথা থাকলেও ‘আয়ত্ত শাসনের’ ব্যবস্থাও রেখে দেওয়া হয়েছে। দুর্বল ব্যক্তিত্বের ব্যক্তিকেই সরকার উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘আমাদের শিক্ষাকে শাসনকাঠামো থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই। সহিংসভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বদলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’’

লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শুধু ব্যবসায়িক চিন্তা প্রতিফলিত হচ্ছে। নাগরিক, মানুষ কিংবা পরিবেশের বদলে বিনিয়োগকারীর জায়গা থেকে সবকিছু দেখা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রক্ষা করতে হবে।

আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী এই কনভেনশনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর রাজী, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ