টি-টোয়েন্টিতে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল ভারত
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ AM , আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ AM
টি-টোয়েন্টিতে এক বছরে সবচেয়ে বেশি বার ২০০ বা তার বেশি রান করার বিশ্ব রেকর্ড এতদিন ছিল ভারত, জাপান ও ইংল্যান্ডের ক্লাব বার্মিংহাম বিয়ার্সের যৌথ দখলে। এবার বাকিদের পেছনে ফেলে এককভাবে এই রেকর্ড গড়ল ভারত।
২০২৪ সালে ভারতের ব্যাটিং তাণ্ডব এই রেকর্ডকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তারা এই বছর মোট ৮ বার ২০০ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলেছে, যা আন্তর্জাতিক এবং স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম। এর আগে এক বছরে সর্বোচ্চ ৭ বার ২০০ বা তার বেশি রান করার রেকর্ড ছিল ভারত (২০২৩), জাপান (২০২৪) এবং বার্মিংহাম বিয়ার্সের (২০২২)।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ভারত বিশাল ২১৯ রান সংগ্রহ করে। ইনিংসের প্রধান স্তম্ভ ছিলেন তিলক ভার্মা, যিনি ৫৬ বলে ১০৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ছিল ৯টি চার এবং ৬টি ছক্কা, যা ভারতকে বিশাল স্কোরের দিকে নিয়ে যায়।
তিলকের এই সেঞ্চুরি ছাড়াও ভারতের স্কোরবোর্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন সূর্যকুমার যাদব এবং ঈশান কিষাণ। তারা মধ্য ও শেষের ওভারে দ্রুত রান তোলায় দলের স্কোর ২০০ ছাড়িয়ে যায়। ভারতের ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী ইনিংসের কারণেই এই বছর ২০০ বা তার বেশি রান করার ক্ষেত্রে তাদের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে।
অন্যদিকে, বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাও কঠিন লড়াই করে। শুরুতেই অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা এবং কুইন্টন ডি ককের ঝড়ো ব্যাটিং দক্ষিণ আফ্রিকাকে লক্ষ্যের পথে এগিয়ে দেয়। তবে মধ্যের ওভারে ভারতের স্পিনাররা গুরুত্বপূর্ণ কিছু উইকেট তুলে নেওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা কিছুটা চাপে পড়ে।
শেষ দুই ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ৫১ রান। ১৯তম ওভারে তরুণ পেসার আর্শদীপ সিংয়ের বলে দুটি ছক্কা ও তিনটি চারের সাহায্যে ২৬ রান তুলে নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন মার্কো জানসেন।
তবে শেষ ৬ বলে ২৫ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। আর্শদীপের শেষ ওভারেই নির্ধারিত হলো ম্যাচের ভাগ্য। প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন আর্শদীপ, ফলে চাপ আরও বেড়ে যায়। এরপর ধারাবাহিকভাবে ইয়র্কার ও বাউন্সার দিয়ে তিনি রান আটকাতে সক্ষম হন এবং ১১ রানের জয় নিশ্চিত করে ভারতকে ইতিহাসের অংশ করে তোলেন।
ভারতের এই বছর টি-টোয়েন্টিতে একাধিকবার ২০০ বা তার বেশি রান করার পেছনে বড় কারণ ছিল তাদের ব্যাটিং গভীরতা এবং শক্তিশালী মিডল অর্ডার। রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, সূর্যকুমার যাদব, তিলক ভার্মা, হার্দিক পান্ডিয়া এবং ঈশান কিষাণের মতো ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিক ফর্ম ভারতকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।
কোচিং স্টাফ এবং দলের অধিনায়কত্বে রোহিত শর্মার নেতৃত্ব ভারতকে এই বছর আরও আগ্রাসী ব্যাটিং পন্থা গ্রহণে উৎসাহিত করেছে। তরুণদের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি অভিজ্ঞদের দিয়ে ইনিংস স্থির করানোর কৌশল সফলভাবে কাজে লেগেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা এই সিরিজে ভারতের ব্যাটিং শক্তির মুখে চাপ থাকলেও প্রতিটি ম্যাচেই আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখিয়েছে। তরুণ পেসার মার্কো জানসেনের শেষ ওভারের ব্যাটিং এবং প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের সাহসী ইনিংস প্রমাণ করে, দলটি সামনের ম্যাচগুলিতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সমর্থকরা।