সামাজিক মাধ্যমেই কেন টাইগারদের অবসরের ঘোষণা

তামিম, মুশফিক, রুবেল ও তাদের বিদায়ী স্ট্যাটাস।
তামিম, মুশফিক, রুবেল ও তাদের বিদায়ী স্ট্যাটাস।  © টিডিসি ফটো

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুঞ্জন উঠেছিল লাল বলের ক্রিকেট থেকে অবসরে যাচ্ছেন পেসার রুবেল হোসেন। অবশেষে সেই গুঞ্জনকে সত্যি করে ৩২ বছর বয়সী এ পেসার টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন। এই সংবাদটি অফিসিয়ালি না হলেও গতকাল (১৮ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে চলে আসে। নিজের অবসর নিয়ে আনঅফিসিয়ালি সংবাদমাধ্যমগুলোর সাথে কথাও বলেন রুবেল। অফিসিয়ালিও টেস্ট থেকে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন রুবেল।

কিন্তু কোনো মাঠ বা সাংবাদিক সম্মেলন নয় বরং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে টেস্ট থেকে অবসরের কথা জানান তিনি। তার আগে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুই তারকা তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিমকেও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন এই ফেসবুকের মাধ্যমেই।

বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম এশিয়া কাপ থেকে ফিরে নীরবে-নিভৃতে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নেন। বিসিবিও মনে হয় এই ব্যাটসম্যানের সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছে, অন্তত পক্ষে কর্তাব্যক্তিদের কথা শুনে তেমনটাই মনে হয়েছে।

মাস দুয়েকের বেশি সময় আগে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অফিসিয়ালি অবসরে যাওয়া তারকা ব্যাটার তামিমকে বেছে নিতে হয়েছে ফেসবুক মাধ্যমকে। অথচ বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ওপেনার টি-টোয়েন্টি থেকে থামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারও মাস ছয়েক আগে। বিসিবিকেও জানিয়েছেন সেই সিদ্ধান্ত। কিন্তু কোথাও এক অদৃশ্য কারণে বিসিবি এবং তামিম একে অপরকে সঙ্গী করে অফিসিয়ালি ঘোষণা দিতে পারেনি। শেষে ফেসবুকে নিজের পেজে তামিম ১৭ জুলাই লিখেন, ‘আজ থেকে আমাকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া একজন হিসেবে ধরে নিতে পারেন।

আরও পড়ুন: চাপ নয়, নির্ভার হয়ে খেলো: মাশরাফি

সম্প্রতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবসর নিয়েও কত আলোচনা-সমালোচনার গুঞ্জণ বয়ে গেছে গণমাধ্যমগুলোতে। অবস্থা এমন দেখা গিয়েছে, বিসিবি এবং ক্রিকেটাররা যেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে একবিন্দুতে আসতেই পারছে না। এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফী বিন মর্তুজা ক্ষেত্রেও। বিসিবির প্রতি ক্ষোভের কারণে এখন পর্যন্ত ওয়ানডে এবং টেস্ট থেকে তো অবসরের সিদ্ধান্তও নেননি মাশরাফী।

ক্রিকেটারদের কেন ফেসবুকেই নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত জানাতে হলো? এর সবচেয়ে বড় উত্তর হতে পারে বাংলাদেশে ক্রিকেট সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি।

অথচ, ক্রিকেট বিশ্বের অন্য দেশগুলো যেমন অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড কিংবা পাশের দেশ ভারতেও বোর্ডের পক্ষ থেকে বিবৃতি জানাতে দেখা যায়। সেই সব দেশে বোর্ডকে সিদ্ধান্ত জানানোর পর দুই পক্ষ থেকে ঘোষণা আসতেও দেখা যায়। সম্প্রতি কিউই ক্রিকেটার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের অবসর, সুরেশ রায়নার থেমে যাওয়া কিংবা ট্রেন্ট বোল্টের ভবিষ্যৎ ভাবনা বোর্ডের পক্ষ থেকেই ঘোষণা এসেছে।

আরও পড়ুন: রুবেলের সঙ্গে টেস্ট থেকে অবসরে আরও এক পেসার

রুবেল বিসিবিকে জানিয়েছিলেন টেস্ট থেকে থেমে যাচ্ছেন তিনি। অথচ বিসিবি নিজেদের পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি কোনো ঘোষণা দেয়নি। অফিসিয়াল চিঠি পেয়েও অজানা কারণে চুপ রইল বিসিবি। রুবেলই নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়েছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম আমি একটা বিষয় জানাতে চাই! আজকে বিসিবিতে অফিশিয়ালি চিঠি দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিলাম।’

বিসিবির সঙ্গে টাইগার ক্রিকেটারদের এই অদৃশ্য দূরত্ব কবেই বা কমবে! কবে থেকে টাইগার ক্রিকেটাররা ফেসবুকে জানানোর আগে বিসিবি বরং তাদের বিবৃতিটাই নিজেদের প্রেস রিলিজে গণমাধ্যমের কাছে পৌঁছে দেবে! কবেই বা সঠিক ক্রিকেট সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বিসিবি, ক্রিকেটারদের মধ্যে!


সর্বশেষ সংবাদ