নিজের জন্য জার্সি বানাতে গিয়ে উদ্যোক্তা বাকৃবির হাসিবুর রহমান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ PM , আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ PM
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদ থেকে সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করেছেন হাসিবুর রহমান। তবে তিনি কেবল একজন কৃষিবিদই নন, তিনি একজন উদ্যমী উদ্যোক্তাও। ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে জার্সির ব্যবসা করবে?’ ‘পশুপালন নিয়ে পড়ে গার্মেন্টস ব্যবসা?’ এমন নেতিবাচক মন্তব্য শুনেও দমে যাননি তিনি। স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয়ে অবিচল থেকে গড়ে তুলেছেন নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘বাউ জার্সি ওয়্যার’।
হাসিবুর রহমানের জার্সি ব্যবসার যাত্রা শুরু হয়েছিল খেলাধুলার প্রতি তার ভালোবাসা থেকেই। আর এ কারণেই তিনি ভালো মানের জার্সি কেনার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু তার এলাকায় কোনো মানসম্মত জার্সির দোকান না থাকায়, তাকে জার্সি কিনতে ঢাকায় যেতে হতো। তবে বিপত্তি বাধে করোনার সময়। সেসময় ঢাকার পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও খুচরা জার্সি কিনতে পারেননি তিনি।
এ ঘটনায় তার মধ্যে এক ধরনের জেদ ও সংকল্প তৈরি হয়। তিনি ভাবেন, কেন অন্য কোথাও যেতে হবে, যদি নিজেই একটি মানসম্মত জার্সি তৈরি করা যায়? এই চিন্তাভাবনা থেকেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প শুরু হয়।
কিন্তু উদ্যোক্তা হতে মূলধন দরকার। সেটা কোথা থেকে আসবে? এক্ষেত্রেও হাসিবুরের গল্পটি একটু ভিন্ন। স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষেই পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিয়ে করেন তিনি। বিয়েতে উপহারস্বরূপ আত্মীয়স্বজন তাকে যে অর্থ দেন, সেটা দিয়েই শুরু করেন জার্সি ব্যবসার কাজ। এ কাজে তাকে পুরোপুরি সহায়তা এবং প্রেরণা দিয়েছে তার পরিবার।
হাসিবুরের ব্যবসায়িক পণ্যের তালিকায় রয়েছে ফুটবল ও ক্রিকেট দলের জার্সি, যা তিনি নিজস্ব কারিগর দিয়ে বিশেষভাবে নকশা করান। এই অনন্য নকশার কারণে, ক্যাম্পাস এবং আশপাশের এলাকায় তার পণ্যের চাহিদা প্রচুর। বর্তমানে, তার পণ্য বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার বাজারেই পৌঁছে গেছে। মাসিক বিক্রিও লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার চাপ সামলে ব্যবসা করলেন কী করে? এমন প্রশ্নের উত্তরে এই তরুণ উদ্যোক্তা জানান, 'ইচ্ছা থাকলেই করা যায়। সময়ের সঠিক ব্যবহার করা গেলে পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক কিছুই করা সম্ভব।'
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে হাসিব বলেন, ’ভবিষ্যতে একটি গার্মেন্টস কারখানা দিতে চাই। সেখানে বিস্তৃত পরিসরে আমার নকশা করা জার্সি তৈরি হবে। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ নিয়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও এসব পণ্য রপ্তানি করতে চাই।'