শিবির সন্দেহে ইবির দুই শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মারধর
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:১৬ PM , আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৪৩ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগ কর্তৃক দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবনের করিডরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- দাওয়া এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ইকরামুল ইসলাম এবং আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের জমান গাজী।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের করিডরে শিবির সন্দেহে ইকরামুল ইসলামকে মারতে শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। প্রায় ৮-১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করতে করতে ক্লাপসি গেট দিয়ে বের করে দেন। এরপর ওই শিক্ষার্থী চলে যান। পরে ছাত্রলীগ কর্মীরা জমান গাজীকে সাদ্দাম হোসেন হল থেকে অনুষদ ভবনে ডেকে নিয়ে শিবির সন্দেহে মারধর শুরু করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জমান গাজী আতঙ্কে দৌড় দিলে পিছনে পিছনে টিএসসিসি পর্যন্ত দৌড়ানি দিয়ে আবারও অনুষদ ভবনে ফিরে আসেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে ওই শিক্ষার্থী টিএসসির করিডর দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী অনুষদ ভবনের সকল শ্রেণীকক্ষে যেয়ে লাথি মারেন এবং শিবির সন্দেহ শিক্ষার্থীকে খুঁজতে থাকেন। তবে কাউকে না পাওয়ায় অনুষদ ভবন ত্যাগ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এরপর ক্যাম্পাসসহ প্রশাসনিক ভবন শোডাউন দেন তারা। পরে জঙ্গি বিরোধী নানা স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, অনুষদ ভবনের কয়েকজন শিক্ষার্থী অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দলবদ্ধ ছিল। এ খবরে শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করা হয়। তবে মারধর করার বিষয়ে আমার জানা নেই।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইকরামুল বলেন, আমি পরীক্ষা শেষ করে করিডোরে দাড়িয়ে ছিলাম। এ সময় আমাকে কয়েকজন জিজ্ঞেস করে আমি শিবির করি কিনা। আমি বলি শিবিরের সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। পরে হঠাৎ আমাকে মারধর শুরু করেন।
আরও পড়ুন : চবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জমান গাজী বলেন, দুপুরে আমার ক্লাস ছিল। ক্লাস শেষ করে মেসে যাচ্ছিলাম। সাদ্দাম হলের সামনে গেলে কয়েকজন আমাকে নাম বিভাগসহ বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করেন। পরে অনুষদ ভবনের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আরও কয়েকজন মিলে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা জানতে চান। কোনরূপ সংশ্লিষ্টতা নেই বললেও আমার সাথে মারমুখী আচরণ করেন। একপর্যায়ে দৌড়াতে বললে আমি ভয়ে দৌড়ে চলে যাই। কোনপ্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও একটা সংগঠনের তকমা দিয়ে যেভাবে হেনস্তা করা হলো, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি ইসলামিক সাবজেক্টে পড়ি বলেই কি আমার সাথে এমন আচরণ করবেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।