‘সব টিয়ারশেল শিক্ষার্থীদের দিকে কেন’

পুলিশের অ্যাকশান
পুলিশের অ্যাকশান  © সংগৃহীত

শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র নিউ মার্কেট এলাকা। গতকাল রাত ১২টা থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় চলা এই সংঘর্ষ দমাতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। তবে অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছেন।

সূত্র জানায়, খাবার দোকানে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী নিউ মার্কেটের একটি ফাস্টফুডের দোকানে খাবার খেয়ে বিল না দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে দোকান ভাংচুর করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, কেনাকাটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এসময় কলেজে হঠাৎ খবর আসে, ব্যবসায়ীরা দুই ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করেছে। তারপরই কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে মার্কেটের দিকে আসলে ব্যবসায়ীরা হামলা করে।

প্রথম দফার এই সংঘর্ষ থামাতে পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে অ্যাকশানে নামে পুলিশ। এসময় তারা প্রচুর পরিমাণে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে। তাদের রাবার বুলেটে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশংকাজনক ছিলো। আশংকাজনক অবস্থায় এক ছাত্রকে বেসরকারি মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়।

পুলিশের তোপের মুখে পড়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দিলেও মূলত শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় তারা। যার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুনরায় কলেজের সামনের রাস্তায় অবস্থায় নেয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেয়ার কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ীরাও নিউ মার্কেটের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়। এরপরই ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের চার ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তারা এই সময় সংঘর্ষ দমাতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এই দফায়ও পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট শিক্ষার্থীদের দিকেই যায়। এই সময় পুলিশের সঙ্গে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা নূরজাহান মার্কেট ও চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে আগুন দেয়।

আরও পড়ুন- এডিসি হারুনের প্রত্যাহার চায় শিক্ষার্থীরা

এদিকে পুলিশের অ্যাকশানকে একতরফা উল্লেখ করে সমালোচনা করেছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করছেন তারা।

পুলিশের অ্যাকশানের সমালোচনা করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শিকদার হাসিব বলেন, ব্যবসায়ীরা দোষ করলেও পুলিশ তাদের পক্ষে নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। অনেক শিক্ষার্থী আহত। আমাদের প্রশ্ন, কিসের স্বার্থে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সব টিয়ারশেল শিক্ষার্থীদের দিকে কেন? এসবের জবাব দিতে হবে প্রশাসনকে।

তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীরা রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের পদত্যাগ দাবি করছি।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া মাদ্রাসা, ইডেন কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ