জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজেও চালু হচ্ছে অনলাইন ক্লাস

অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ

নভেল করোনাভাইরাসের কারনে দেশের সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সব কলেজকে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে।

এক্ষেত্রে যেসব প্রতিষ্ঠানের অনলাইন ক্লাস সুবিধা নেই, তাদেরকে দ্রুত এই সুবিধার আওতায় আসতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে যাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুবিধা আছে, তাদেরকে এই প্রক্রিয়া শুরু করার পাশাপাশি চালিয়ে নিতে বলা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনলাইন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাববুব হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৬ টায় পর্যন্ত ওই সভা চলে। 

জানতে চাইতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের অনেক কলেজেই অনলাইনে ক্লাস নেয়া সম্ভব হবে। রাজশাহী কলেজ, বিএম কলেজসহ অনেক কলেজই আছে। এসব কলেজে এই সুযোগ-সুবিধা আছে, আমরা সেসব কলেজে অনলাইন ক্লাস চালু করব। আবার অনেক কলেজে সেটা সম্ভবও হবে না। কারন, সেখানে ইন্টারনেট সেবা নেই। সেজন্য আমি বলেছি, আমরা সব কলেজে একটা নিদের্শনা দিব, যারা যারা পারে তারা যেন অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যায়।

অধ্যাপক হারুন বলেন, ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলব, তারা যেন বাড়িতে বসে পড়ালেখা করে। এজন্য যে, এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার পর আমরা একের পর এক পরীক্ষা নিতে থাকবো। আগে যেমন আমরা ক্রাশ প্রোগ্রমে করে ওভারকাম করেছি, সেই রকম মেথড এখানেও এপ্লাই করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, করোনা নিয়ে একদিকে যেমন জীবন-মরণ প্রশ্ন; আবার অন্যদিকে শিক্ষাকার্যক্রম। তাই দুটোর মধ্যে ব্যালেন্স করতে হবে। আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনা। এজন্য বলেছি যারা যারা (কলেজ) অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যেতে পারবে; তারা যেন চালিয়ে যান।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে তা বলা যাচ্ছে না। এ জন্য দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অনলাইনের আওতায় ক্লাস কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যাদের সক্ষমতা নেই, তাদেরকেও সেই পরিবেশ তৈরি করতে বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ছুটি দীর্ঘায়িত হলে নতুন করে সেশনজটে না পড়তে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের প্রস্তুতি নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন দীপু মনি।

সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কার্যক্রমে শর্ত শিথিল করার কথা জানায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস, সেমিস্টার ফাইনাল ও অন্যান্য পরীক্ষা এবং ভর্তি কার্যক্রম চালাতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের চাপ দিতে পারবে না। সেই সঙ্গে কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তার বেতন-ভাতা কিংবা চাকরি সংক্রান্ত সমস্যাও সৃষ্টি করা যাবে না।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কমিটি তাদের পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল বিষয় ঠিক করবে। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা কীভাবে নেবে, সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করে দেবে কমিশন। পাশাপাশি আগামী সেমিস্টারের ভর্তি কত তারিখ থেকে কত তারিখ পর্যন্ত চলবে; সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন দেবে। 

বৈঠকে ছাত্র-ছাত্রীদের মিডটার্ম ও ফাইনাল পরীক্ষার বিষয়ে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কয়েকটি অপশন দেবে ইউজিসি। এ ক্ষেত্রে আগামী সেমিস্টারের শুরুতে বর্তমান সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে পারে। এছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে যেসব পদ্ধতিতে অনলাইন পরীক্ষা, সেই প্রক্রিয়াও অনুসরণ করা যাবে। তবে পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায়ের জন্য চাপ দেয়া যাবে না।

সভায় অংশ নেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের উচ্চশিক্ষা খাতে যে সংকট দেখা দিয়েছিল, আজকের (গতকাল) সভায় সেটি দূর হয়েছে। অনলাইনে পরীক্ষা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুমোদনের বিষয়টি খুবই ইতিবাচক। এক্ষেত্রে ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দেবে, আমরাও আমাদের কিছু প্রস্তাবনা দেব। সবমিলিয়ে অনলাইনেই উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের এ উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।

বিষয়টি সম্পর্কে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমরা পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদালয়ের পাঠদানসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে যে আলোচনা হয়েছে যে, তা হলো- ইউজিসি প্রদত্ত এর আগের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমান (স্প্রিং-২০২০) সেমিস্টার চলবে। আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করবে, যেখানে বর্তমান সেমিস্টারের পরীক্ষা ও আগামী সেমিস্টারের সার্বিক নির্দেশনা থাকবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence