১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করলেন ববি উপাচার্য

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে  © সংগৃহীত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের চলমান ন্যায়সংগত আন্দোলন দমন করতেই এ জিডি করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও সহকারী রেজিস্ট্রার সানোয়ার পারভেজ লিটন বাদী হয়ে বন্দর থানায় এ সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।

জানা গেছে, গতকাল (২৭ এপ্রিল) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে তার কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর উপাচার্য নিজে বন্দর থানার ওসিকে ফোন করে ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে জিডি করা হয়।

উল্লেখ্য, এর আগেও উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করার অভিযোগ রয়েছে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে আপাতত ১০ জন শিক্ষার্থীর নামে একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে।’

জিডিতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- রাকিন খান (ইংরেজি বিভাগ), নাজমুল ঢালী (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), মোকাব্বেল শেখ (লোকপ্রশাসন বিভাগ), তরিক হোসেন (আইন বিভাগ), মিজানুর রহমান (ইংরেজি বিভাগ), এনামুল হক (ইংরেজি বিভাগ), মো. শিহাব (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ), তরিকুল ইসলাম (ইংরেজি বিভাগ), স্বপ্নীল অপূর্ব রকি (কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগ), রফিক (রসায়ন বিভাগ)G 

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী আমলেও এমন যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা-মামলা দিয়ে দমন করা হতো। এখনো আমরা দেখছি, আমাদের উপাচার্য একইভাবে আমাদের আন্দোলন দমাতে চাচ্ছেন। কিন্তু এসব করে আন্দোলন থামানো যাবে না।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, ‘ভিসি একদিকে বেআইনি ক্ষমতার মাধ্যমে কিছু স্বৈরাচারী ব্যক্তিকে রক্ষা করছেন, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলন দমন করতে মামলা করছেন। এটি প্রশাসনের ফ্যাসিস্ট আচরণ, যা নিন্দনীয়।’

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রেদোয়ান বলেন, ‘তিনি যেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার মতো আচরণ করছেন। শিক্ষার্থীদের কণ্ঠরোধ করতে মামলা ও হয়রানি করা হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে।’

জিডি দায়ের বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ লিটন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রারের কক্ষ তালাবদ্ধ করে রেখেছিল। কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই আমি জিডি করেছি। ব্যক্তিগতভাবে কিছু করিনি।’

বিষয়টি জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনিকে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। একইভাবে উপাচার্যের সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।

এদিকে গণমাধ্যমে উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন সাংবা‌দিক‌দের বলেন, ‘তালা দেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। গুটি কয়েক শিক্ষার্থী এ আন্দোলন করছে। তাদের সবাই চেনে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে‌ছে।’


সর্বশেষ সংবাদ