বেরোবিতে ড. ইউনূসের মতবিনিময় সভায় যাননি কোনো শিক্ষক
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ১১:১৯ AM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪১ PM
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীদের সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর মতবিনিময় সভায় দেখতে পাওয়া যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষককে। ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও মত বিনিময় সভায় বামপন্থী রাজনীতির নেতাকর্মীদের উপস্থিত দেখে শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
তাদের প্রশ্ন, ক্যাম্পাসে রাজনীতির নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও মতবিনিময় সভায় বামপন্থী রাজনৈতিক সংগঠন সমাজতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্টের কিভাবে সভায় উপস্থিত থাকেন?
গত শনিবার ১০ আগস্ট দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা গত ১৬ জুলাই তারিখে নিহত শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করতে পীরগঞ্জের জাফর পাড়ায় যান এবং শহীদের পরিবারের সদস্যদেরও সাথে কথা বলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় যে, প্রধান উপদেষ্টার সাথে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করার কথা ছিল এজন্য ২০ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষকের একটি তালিকাও তৈরী করা হয়েছিল ।
এ তালিকা তৈরীর দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদকে। তিনি শিক্ষার্থীদের আপত্তি সত্ত্বেও নিজের নামসহ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. মোঃ মতিউর রহমান, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব আসিফ আল মতিন, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ফারজানা টসি, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের শিক্ষক ইফফাত আরা বাঁধন ৫ জনের একটি তালিকা তৈরী করে জেলা প্রশাসক কে প্রদান করেন।
বিষয়টি প্রকাশ পেলে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সদ্য সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ এর প্রশাসনের অনুগত ড. মোঃ মতিউর রহমান ও ড. তুহিন ওয়াদুদ এ তালিকায় থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন। শিক্ষকরা মনে করেন সাবেক ভিসি ও তার প্রশাসনের অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারণে শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যাকান্ড ঘটেছে।
আবু সাঈদের হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক করা হয় ড. মতিউর রহমান, বিজন মোহন চাকী ও ড. শফিকুর রহমান কে নিয়ে। এ কমিটি এখন পর্যন্ত কোন কাজ করেনি। ড. মতিউর রহমান প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের তালিকায় থাকায় শিক্ষকেরা আপত্তি জানান। পরে অন্যান্য শিক্ষকেরা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি করলে ড. তুহিন ওয়াদুদ এর তালিকা বাতিল করে শুধু শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষকেরা নিজেদের মতবিরোধের কারণে মতবিনিময় সভায় না থাকায় ক্যাম্পাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শিক্ষকদের অংশগ্রহণ ছাড়া কিভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হবে সে বিষয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
এদিকে উপাচার্য ৯ আগস্ট পদত্যাগ করায় এবং ট্রেজারার ড. মজিব উদ্দিন আহমদ ঢাকায় অবস্থান করায় এবং ডিনগণও উপস্থিত না থাকায় বিশ^বিদ্যালয় সমস্যা নিয়ে প্রধান উপদেস্টার সাথে কেউই কথা বলতে পারেননি।