শিক্ষকদের পর এবার শিক্ষার্থীদেরও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তাদের কর্মবিরতির কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল। যদিও তাদের কর্মসূচি দু’দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ফলে আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) এবং শনিবার (৬ জুলাই) তারা কর্মবিরতি পালন করবেন না। তবে এ সময়ে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক সময়েও হয় না। দাবি আদায় না হলে আগামী রোববার (৭ জুলাই) থেকে পুনরায় কর্মবিরতি শুরু করবেন তারা।

এরইমধ্যে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর অংশ হিসেবে রোববার থেকে তারাও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শিক্ষকদের ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদেরও এমন ঘোষণায় আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন-অফলাইনে গণসংযোগ, শনিবার বেলা ৩টায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ এবং রোববার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হোসেন এ ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে শাহবাগ ছেড়ে যান আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল। যদিও তাদের কর্মসূচি দু’দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। রোববার থেকে পুনরায় কর্মবিরতি শুরু করবেন তারা। এরইমধ্যে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রোববার থেকে তারাও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শিক্ষকদের ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদেরও এমন ঘোষণায় আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

নাহিদ বলেন, কোটা পুনর্বহাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি প্রহসন। শিক্ষার্থীরা এ প্রহসন মেনে নেবে না। এ পরিপত্রের মধ্যে কোনো ঝামেলা আছে। তাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে। সরকারও কোনো ধরনের যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়নি। তারা এর নিন্দা জানান।

তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে-২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা-ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

এ ছাড়া সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শুন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এর আগে গত ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষকরা। এরপর থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত রয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কর্মসূচির চতুর্থ দিনে ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমরা আগামী রোববার আবার আমাদের কর্মসূচি পুনরায় শুরু করব। শুক্র ও শনিবার এ দু’দিন কর্মসূচি স্থগিত থাকবে।

আরো পড়ুন: শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে কোটা আন্দোলনের নেতাকে হলে ফেরাতে বাধ্য প্রশাসন

এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার সরকারের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে স্থগিত হয়ে যায়। ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেছেন, তারা একটি ইতিবাচক সমাধানের জন্য আশাবাদী। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমাদের সাথে বসবেন। 

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল শিক্ষক নেতাদের। সেটিও শেষ মুহূর্তে স্থগিত করা হয়েছে। গত ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন ফটকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া। সে ঘোষণার পর ১ জুলাই থেকে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ