মর্গে ইডেনছাত্রীর পরিচয় নিয়ে ধুম্রজাল, পরে যা জানা গেল

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড

অভিশ্রুতি শাস্ত্রী
অভিশ্রুতি শাস্ত্রী  © ফাইল ছবি

রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক ও ইডেন কলেজছাত্রী অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে দিনভর ছিল ধোঁয়াশা। দুপুরে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আসেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার সবুজ শেখ। তিনি অভিশ্রুতিকে নিজের মেয়ে দাবি করেন। 

কিন্তু বিপত্তি বাধে নাম-পরিচয় নিয়ে। সবুজ শেখের দেখানো এনআইডি কার্ডে বাবার নামের জায়গায় সবুজ শেখ থাকলেও মেয়ের নাম লেখা বৃষ্টি খাতুন। এ কারণে প্রতারক ভেবে পুলিশ সবুজ শেখকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। 

সবুজ শেখের দাবি, নিহত অভিশ্রুতি শাস্ত্রীই তার মেয়ে বৃষ্টি খাতুন। কিন্তু সে ঢাকায় এসে নিজেকে হিন্দু হিসেবে পরিচয় দিত, নিয়মিত মন্দিরে যেত।  

তবে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর গ্রামের ইউপি (বনগ্রাম) চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি আমার বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। ২০১৬ সালে সে এসএসসি পাস করে। এরপর বৃষ্টি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। পরে ইডেন কলেজে ভর্তি হয়। সম্প্রতি আমার ছেলেকে ঢাকায় ভর্তির ব্যাপারে বৃষ্টি সহায়তা করে।

মা বিউটি বেগম বলেন, আমার তিন মেয়ে। এর মধ্যে বড় বৃষ্টি, মেজ মেয়ে ঝর্ণা একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে বর্ষা দশম শ্রেণির ছাত্রী। কিছুদিন আগে বৃষ্টি আমার কাছে টাকা চায়। তার শরীরে সমস্যা ছিল। জানতে চাইলে শুধু বলতো, খুবই সমস্যায় আছি, পরে বলব।

রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বলেন, গত আট মাস ধরে আমাদের সঙ্গে অভিশ্রুতির পরিচয়। মন্দিরে নিয়মিত আসতেন। আমাদের মন্দিরের সঙ্গে অনেকটাই কানেক্টেড তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়।

অভিশ্রুতি সদ্য ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছেন। ঢাকার মৌচাকের সিআইডি অফিসের বিপরীতে একটি মেসে থাকতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন। 

অভিশ্রুতির বান্ধবী জশোয়া জানান, অভিশ্রুতির বাঁচার প্রচণ্ড ইচ্ছা ছিল। ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসত। ইচ্ছা ছিল পৃথিবীর অনেক জায়গা ঘুরে দেখবে। কিন্তু এসব আর কিছুই হলো না। মুহূর্তে চলে গেল।

দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের চিফ রিপোর্টার গোলাম রাব্বানী জানান, চাকরির বায়োডাটায় তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তবে এটি তার পারিবারিক নাম কি-না জানি না। 

তিনি বলেন, মাসখানেক আগে অসুস্থতার কারণে চাকরি ছেড়েছিলেন। অভিশ্রুতির শরীরে ‘সিস্ট’ ধরা পড়ে। অপারেশনের পর তিনি সুস্থ হন।


সর্বশেষ সংবাদ