বইপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর বেরোবির ‘গুনগুন-রণন’ বইমেলা

বেরোবির গুনগুন-রণন বইমেলার একটি স্টলে বই দেখছেন দর্শনার্থীরা
বেরোবির গুনগুন-রণন বইমেলার একটি স্টলে বই দেখছেন দর্শনার্থীরা  © টিডিসি ফটো

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ভাষার মাস উপলক্ষে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গুনগুন ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রণন’র  যৌথ প্রয়াসে চলছে বইমেলা। ছয় দিনব্যাপী ‘গুনগুন-রণন’ সপ্তম বইমেলার চতুর্থ দিন আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)। বইমেলা উদ্বোধনের পর থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

প্রতিদিন বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বইপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে বইমেলা প্রাঙ্গণ। নানা ধরনের বই দিয়ে সাজানো হয়েছে মেলার স্টলগুলো। ভিড় করছেন কবি, সাহিত্যক, প্রবীণ এবং কমবয়সী তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বাবা-মায়ের হাত ধরে চলা ছোট ছোট সোনামনিরাও।

ক্যাম্পাসের হাজারো বইপ্রেমী প্রতি বছর অপেক্ষা করে থাকে এ বইমেলার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি ঢাকা ও রংপুরের বিভিন্ন নামকরা প্রকাশনী এবং শিল্প-সাহিত্য বিষয়ক সংগঠনগুলো মেলায় অংশ নিয়েছে। এ বছর মেলায় ৪২টি স্টল অংশ নিয়েছে।

জনপ্রিয় কবি-লেখকদের গল্প-কবিতা-উপন্যাসের প্রতি যেমন আগ্রহ পাঠকের, তেমনি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক বইগুলোর প্রতি। বইমেলায় সবার নজর নতুন বইয়ের দিকে। এ বছর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত কয়েকটি নতুন বই বেরোবির ‘সেইলর গুনগুন-রণন’ বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে।

মেলায় আসা গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নিশাত তামান্না বলেন, ‘পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর মেলা হলো বইমেলা। ছোটবেলা থেকেই আমার বই পড়ার প্রতি প্রচুর ঝোঁক। সেই আগ্রহ থেকে বইমেলায় কিছু নতুন বই কিনতে এসেছি।’

রংপুর নগরীর খামার মোড় থেকে আসা সাকিব আদনান নামের একজন বলেন, ‘মেলায় আসি, কারণ মেলায় আসলে নানান ধরনের সাহিত্যপ্রেমী মানুষের সহচরে জীবনকে ভাবতে সাহায্য করে। মেলায় আসলে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।’

এদিকে পীরগঞ্জ থেকে পরিবারসহ বইমেলায় এসেছেন কামাল মিয়া। তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো আমি এবারও বেরোবির বইমেলায় এসেছি। আমি সাহিত্যকে ভালবাসি। তাই বইমেলায় আমার পরিবারকে নিয়ে পছন্দের লেখকের বেই কিনতে এসেছি।

পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্টুডেন্ডস সোসাইটি স্টলের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকত্তোর শেষ পর্বের শিক্ষার্থী মুরাদ হোসেন মুন বলেন, ছয় দিনব্যাপী মেলায় বইপ্রেমীদের বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। বাকি দিনগুলোতে আরও ভালো সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

আরো পড়ুন: ৩৩ বসন্ত পেরিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

মেলার আয়োজক গুনগুনের সভাপতি ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, ‘বইয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীসহ সকলের নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতেই এ বইমেলার আয়োজন। আমরা চাই, প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ুক বই পড়ার অভ্যাস। বই হোক সবার নিকট বন্ধু, আগামী প্রজন্ম বইমুখী হোক এটাই প্রত্যাশা।’

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এ বইমেলা চলবে ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৯ টা পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলার পাশাপাশি রয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ফ্যাশন ব্র‍্যান্ড সেইলর টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে এ আয়োজনে।


সর্বশেষ সংবাদ