রাবিতে দু'দিন ব্যাপী চিহ্নমেলা মুক্তবাঙলা শুরু

রাবিতে দুই দিনব্যাপী চিহ্নমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
রাবিতে দুই দিনব্যাপী চিহ্নমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই বাংলার লেখক-পাঠক ও সম্পাদকদের নিয়ে সাহিত্য পত্রিকা চিহ্ন আয়োজিত 'চিহ্নমেলা মুক্তবাঙলা ২০২২' শুরু হয়েছে। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং চিহ্ন'র পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার বের করা হয়।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবনের সামনে ফানুস উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন প্রসিদ্ধ লিটলম্যাগ ব্যক্তিত্ব সন্দীপ দত্ত।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য কবি নির্মলেন্দু গুণ, রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল- ইসলাম, বিশিষ্ট সাহিত্যিক জুলফিকার মতিন, রাবির বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা এবং চিহ্ন মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক শহিদ ইকবাল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, দীর্ঘদিন পর আমাকে কোনো একটা অনুষ্ঠানে যুক্ত করার কৃতিত্ব 'চিহ্ন' পরিবার দাবি করতে পারে। গত চারবছরের মধ্যে আমি ঢাকার বাইরে কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করিনাই এবং ঢাকার মধ্যেও হাতেগোনা কয়েকটা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলাম।

তিনি আরো বলেন, যথেষ্ট বয়স হয়েছে এখন। বাকি জীবনটা বাড়িতেই কাটিয়ে দিতে চাই। ধরেই নিয়েছিলাম, জীবনে কখনো আর বিমানে উঠবোনা। কিন্তু গতকাল যখন বিমানে আসলাম, তখন খুব ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে, জীবনে প্রথম বিমানে উঠলাম, এতোই আনন্দ ছিল গতকাল।

চিহ্ন মেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চিহ্ন নামটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। 'চিহ্ন' নামটা শুনেই আমার মনে পড়েছে রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত গান 'যখন পড়বেনা মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে'। রবীন্দ্রনাথের এই চিহ্ন না পড়াটাকে তিনি ঋণাত্মক অর্থে বলেছেন, কিন্তু এই মেলার চিহ্ন শব্দটা ইতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আমরা আমাদের ভালোবাসা, সম্মান ও প্রতিবাদের চিহ্ন রেখে যেতে চাই আমাদের শিল্পকর্মের মধ্য দিয়ে। এই ইতিবাচকতাটা আমাদের জন্য খুব দরকার।

আরও পড়ুন: আসন সংখ্যা কমিয়ে হাবিপ্রবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

কবি আরো বলেন, এখানে আমাদের অনেকের পায়ের চিহ্ন পড়েছে। এই চিহ্নসমূহ শুধু চিহ্ন নয়, এগুলো আমাদের প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা, প্রতিশ্রুতি, ভালোবাসা, মিলন, বিদ্রোহ এবং অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামের চিহ্ন। এই উৎসব সফল হোক। দীর্ঘদিন ধরে এই উৎসব আমাদের মধ্যে নতুন প্রাণ ও প্রেরণার সঞ্চার করুক এবং অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি জোগান দিক।

এসময় রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, সীমানার বাধা পেরিয়ে আমরা দুই বাংলার মানুষ এখানে একত্রিত হয়েছি, এটা আমাদের একটা বড় পাওয়া। আমরা যারা বাংলা ভাষায় কথা বলি, তাদের এই মিলনমেলা একটা মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আমি আশা করি, এই মিলনমেলা আমাদের আগামীর পথ দেখাবে।

তিনি আরো বলেন, এই চিহ্নমেলা যে চিহ্ন রেখে যাবে, সেই চিহ্নকে অনুসরণ করেই আমরা আলোকিত পথে এগিয়ে যেতে পারি। আমাদের মধ্যে যত কূপমন্ডুকতা ও অপশক্তি আছে, সেগুলো দূর করে আমরা আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে পারি। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন সকল বাঙালি দেখেন এবং যে স্বপ্ন আমাদের জাতির জনক দেখিয়ে গেছেন। 

উল্লেখ্য, দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশ ও দেশের বাইরের দুই শতাধিক লিটলম্যাগ এবং পাঁচ শতাধিক লেখক-পাঠক ও সম্পাদকের সম্মেলন ঘটেছে। সোমবার প্রথমদিনে বিভিন্ন বিষয়ে আড্ডা, মুক্তভাষণ, গল্প ও কবিতাপাঠ এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

মেলার দ্বিতীয় দিনও বিভিন্ন বিষয়ে আড্ডা, গ্রন্থ ও পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন, প্রবন্ধ পাঠ অনুষ্ঠিত হবে। সমাপনী সন্ধ্যায় বিভিন্ন শ্রেণীতে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে 'চিহ্ন' সাহিত্য পত্রিকা লেখক-পাঠক ও সম্পাদকের এই বৈশ্বিক সম্মেলন আয়োজন করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে 'চিহ্নমেলা মুক্তবাংলা'।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence