শর্তসাপেক্ষে হাফ ভাড়া, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের ক্ষোভ

কেবল ঢাকা মহানগরে শর্তসাপেক্ষে ‘হাফ ভাড়া’ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাস মালিকরা
কেবল ঢাকা মহানগরে শর্তসাপেক্ষে ‘হাফ ভাড়া’ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাস মালিকরা  © টিডিসি ফটো

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে কেবল ঢাকা মহানগরে শর্তসাপেক্ষে ‘হাফ ভাড়া’ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাস মালিকরা। তবে, এসব শর্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) বিভিন্ন সংগঠন।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সংবাদ সম্মেলনে ‘হাফ ভাড়া’ কার্যকরের ক্ষেত্রে যে শর্তগুলো আরোপ করেছেন তা জানার পরপরই বিভিন্ন সংগঠন গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নিকট চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ সময় গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রনি বলেন, শুধুমাত্র ঢাকা শহরে হাফ ভাড়া কার্যকর করা হয়েছে তাহলে বাংলাদেশের আর কোথাও কোন শিক্ষার্থী নেই? এমন নির্লজ্জ সিদ্ধান্ত তারা কোন হিসেবে নেয় মাথায় আসে না। ছুটির দিন বলে তো কিছু নাই শিক্ষার্থীরা ক্লাস ছাড়াও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট নানান কাজে যাতায়াত করে তাছাড়া, অনেক প্রতিষ্ঠান অনেক শিক্ষার্থীকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও ক্লাস করতে হয় তাহলে তাদের ক্ষেত্রে কি হবে? এমন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।

সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম ১৫% বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার রেশ না কাটতেই শুরু হয় শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের এ দাবি নিয়ে আন্দোলনের মুখে সারাদেশে সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য ভাড়া শতকরা পঞ্চাশ ভাগ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারে এমন সিদ্ধান্তেও কিছু শর্তের বেড়াজাল ছিল। এবার একই পথে হাঁটছে ব্যক্তি মালিকানাধীন গণপরিবহনও।

সামগ্রিক বিষয়টি টেনে এনে, গণ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শর্তগুলো একই রকম। এরা আসলে শিক্ষার্থীদের সাথে পায়তারা করতেছে। একজন শিক্ষার্থীর নানান কাজে নানারকম ব্যস্ত থাকতে হয় এমন বেঁধে দেওয়া সময়ের হিসাব কোনভাবেই মানা যায় না।

সম্প্রতি, হাফ ভাড়া নিয়ে বাকবিতন্ডায় এক শিক্ষার্থী ও এক ছাত্র হত্যার ঘটনা এবং নিরাপদ সড়ক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গণ বিশ্ববিদ্যালয় মিউজিক কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক বলেন হাফ ভাড়ার যৌক্তিক দাবীতে শিক্ষার্থীরা কথা বলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় এতো ক্ষমতা তারা কোথা থেকে পায়? নিত্যদিন ঘটছে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার মতো জঘন্যতম ঘটনা। বেপোরোয়া গতির গাড়ী আর হাফ ভাড়া নিয়ে কথা বলা শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা, ধর্ষণের হুমকি দেওয়া আজ সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এর প্রতিকার চাই আমরা।

গণ পরিবহনে মূল্যবৃদ্ধি এবং হাফ পাশের ইস্যুর সমস্ত বিষয়ের সাথে জীবনযাত্রার ব্যয় ও বর্তমান অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী করে অগ্নিসেতু সাংস্কৃতিক পরিষদের গণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি সামিনা সুলতানা বলেন, করোনাকালীন সময়ে যেখানে ২ কোটি মানুষ নতুন করে বেকার হয়েছে, সেখানে পণ্যদ্রব্যের দাম থেকে শুরু করে কাঁচামাল সব কিছু দাম নতুন করে বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের মাধ্যম বাস, সেখানেও শুরু হয়েছে নতুন নাটক। শুধু ঢাকা শহরেই হাফ ভাড়া, শুক্রবার এবং বন্ধের দিন কোনো হাফ পাশ নেই, সব কিছুর পেছনে যে কাদের হাত তা বোঝার জন্য গবেষণার দরকার নেই।এক দল পুঁজিবাদী মালিক শ্রেণি এই সব জুলুম করছে, আর তাদের ইন্ধন দিচ্ছেন সরকার। নয়তো তারা এত জুলুম করার সাহস পায় কথায়।

বাসে বাসে চাঁদাবাজির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, হাফ পাশ কার্যকরে তাদের এত শর্ত এত মাথাব্যথা অথচ কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির কোন হিসাব নাই। এই চাঁদবাজেরাই হাফ পাশ বিরোধী, শিক্ষার্থীদের দমনে ঐক্যবদ্ধ আর সরকার এদের রক্ষাকর্তা।


সর্বশেষ সংবাদ