১৮ জুন ২০২৫, ১৫:১৬

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি  © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে টেলিফোনে এক আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প ও মোদি তাদের আলোচনার সময়ে ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘর্ষ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছেন। তবে দুই নেতার মধ্যে প্রায় ৩৫ মিনিট আলোচনা হয় মূলত ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে।

আজ বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি এক বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন।

আজ ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় দুপুরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। তার আগেই ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের দুই নেতার মধ্যে কথা হলো।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘পহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলার পরে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেদিন তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার সমর্থনের কথাও জানিয়েছিলেন। তারপরে দুই নেতার মধ্যে এই প্রথম কথা হলো।

‘এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অপারেশন সিন্দুর নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন, বলেছেন মিশ্রি।

তার কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ২২ এপ্রিলের পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পের কথা গোটা বিশ্বের কাছে জানিয়ে দিয়েছিল ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন যে ছয়-সাতই মে রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে শুধু জঙ্গি ঘাঁটি ও গোপন আস্তানাগুলিকেই নিশানা করেছিল ভারত । পরিমিত, সুনির্দিষ্ট ও উত্তেজনা যাতে প্রশমিত না হয়, সে রকমই পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত। ভারত এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যে কোনও আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে বসছেন ট্রাম্প

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিক্রম মিশ্রির যে ভিডিও বার্তাটি শেয়ার করেছেন, তাতে সচিব বলছেন, ‘গত ৯ মে রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন মার্কিস ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। ভান্স জানিয়েছিলেন যে পাকিস্তান ভারতে বড়সড় হামলা চালাতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন যে যদি এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে ভারত আরও কড়া প্রত্যুত্তর দেবে।’

‘ভারত ৯-১০ মে রাতে পাকিস্তানের হামলার কঠিন জবাব দেয় এবং পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করে। তাদের সামরিক বিমানঘাঁটিগুলো অকেজো করে দেওয়া হয়। ভারতের দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে পাকিস্তান সামরিক অভিযান বন্ধের অনুরোধ করতে বাধ্য হয়, মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের ফোনালাপের বিষয়ে জানিয়েছেন বিক্রম মিশ্রি।

বিবৃতিতে তিনি এও বলেছেন যে, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এই গোটা ঘটনাক্রমে কোনো সময়েই ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা বা যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়নি।’

আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬

বিক্রম মিশ্রির কথায়, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের প্রতি তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেন।’

মিশ্রি জানিয়েছেন যে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন ট্রাম্প আর মোদির মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়ায় ওই আলোচনা হতে পারেনি।

পররাষ্ট্র সচিবের কথায়, এরপরে  ট্রাম্পের আগ্রহেই দুই নেতা টেলিফোনে কথা বলেন ভারতীয় সময় বুধবার সকালে।
সূত্র: বিবিসি