মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি মার্কিন রণতরী মোতায়েন, উত্তেজনা

ইসরাইল তাদের গোয়েন্দা সংস্থার একটি রিপোর্টে স্বীকার করেছে যে, ইয়েমেন একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং তাদের সামরিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যাপক স্বাধীনতা রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সানার এই স্বাধীনতা লোহিত সাগর ও এর আশেপাশের জলপথে ইয়েমেনের সামরিক কার্যকলাপ প্রতিরোধে ইসরাইল, আমেরিকা এবং তাদের মিত্রদের প্রচেষ্টাকে ব্যাপকভাবে জটিল করে তুলেছে।
মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও রণতরীতে ইয়েমেনি সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইসরাইল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, যদিও তারা যৌথভাবে এখনো ইয়েমেনের বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষদের হত্যা করতে থাকে, যার মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে, মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (CENTCOM) জানায়, ইউএসএস কার্ল ভিনসন নামের একটি বিমানবাহী রণতরী মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছেছে, এবং এটি আগেই মোতায়েন করা ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
এই মোতায়েনের সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গত এক মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে ২০০টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ইয়েমেনি নিহত হয়েছেন। ১৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় নিরীহ মানুষের মৃত্যু ঘটে।
ইয়েমেনে এই সামরিক অভিযানটি শুরু হয় আনসারুল্লাহ (হুথি) গোষ্ঠীর এক ঘোষণার পর, যেখানে তারা গাজায় ইসরাইলের চলমান আগ্রাসনের প্রতিবাদ হিসেবে ইসরাইলগামী যেকোনো জাহাজে আক্রমণ করার হুমকি দেয়। ঘোষণার পর থেকে ইয়েমেনি সামরিক বাহিনী কয়েকবার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে মার্কিন রণতরী ও ইসরাইলি অবস্থানে হামলা চালিয়েছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করা হয়েছে। তারা বলছে, গাজায় ইসরাইলের অবরোধ ও আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই হামলা চলবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় ৬১,৮০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।