হামাসপ্রধান ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে হত্যার ঘটনায় যা বলল ইরান ও হিজবুল্লাহ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৬ AM , আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৬ AM
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহইয়া সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৮ অক্টোবর) গাজার রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারান তিনি। তবে দখলদার সেনারা জানত না তারা সিনওয়ারকে হত্যা করেছে।
গুঞ্জন উঠলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) নিশ্চিত হওয়া গেছে, হামাস প্রধান ইসরায়েলিদের হামলায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া দখলদার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ তার মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন।
ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে হত্যার পর ইরান জানিয়েছে, এতে প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর চেতনা আরও শক্তিশালী হবে। অন্যদিকে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধকে নতুন ও গতিশীল ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে। খবর রয়র্টাসের।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে। এরপর থেকেই অবরুদ্ধ গাজায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, মৃতদেহ শনাক্ত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে হত্যার করার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও বলেছেন, সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়েছে।
যদিও হামাসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। তবে সংগঠনটির সূত্রগুলো বলছে, যে সব ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সিনওয়ারকে হত্যা করেছে।
পশ্চিমা নেতারা বলেছেন, সিনওয়ার মৃত্যু সংঘাতের অবসানের একটি সুযোগ দিয়েছে। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যে হামাস জঙ্গিদের দ্বারা আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। বৃহস্পতিবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রেকর্ড করা এক ভিডিও বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, বুধবার রাফার একটি ভবনে হামাসের কয়েকজন যোদ্ধাকে প্রবেশ করতে দেখে ইসরায়েলি সেনারা। এর পর সেখানে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। হামলার পর সেনারা সেখানে যাওয়ার পর সিনওয়ারের মতো দেখতে এক যোদ্ধাসহ মোট তিনজনের লাশ পায়। এর পর গতকাল নিশ্চিত হওয়া গেছে ওই লাশটি সিনওয়ারেরই ছিল।
হামাসের দুটি সূত্র সৌদির সংবাদমাধ্যম আশরাক আল-আসওয়াতকে সিনওয়ারের মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, গাজার ভেতর এবং বাইরে থাকা নেতাদের সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।
তারা আরও জানিয়েছেন, সিনওয়ারের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কয়েকদিন আগে সবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, গতকাল গাজার রাফার একটি ভবনে হামাসের কয়েকজন যোদ্ধাকে প্রবেশ করতে দেখে ইসরায়েলি সেনারা। এরপর সেখানে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। হামলার পর সেনারা সেখানে যাওয়ার পর সিনওয়ারের মতো দেখতে এক যোদ্ধাসহ মোট তিনজনের মরদেহ পায় তারা। এরপর আজ নিশ্চিত হওয়া গেছে ওই মরদেহটি সিনওয়ারেরই ছিল।
সিনওয়ারের মরদেহের তিনটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যাচ্ছে তিনি একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছেন। তার মাথায় গভীর ক্ষত রয়েছে। ওই সময় সিনওয়ার নিরাপত্তা ভেস্ট এবং হাতে একটি ঘড়ি পরা ছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ছবিগুলো যাচাই বাছাই করে বলেছে, মরদেহটির চোখের ব্রু, চোখের নিচের একটি দাগ এবং দাঁতের সঙ্গে সিনওয়ারের আগের ছবির সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। যার অর্থ এটি সিনওয়ারেরই মরদেহ ছিল।