জন্মদিন পালনের কথা বলে হোটেলে নিয়ে হত্যা করে নারী চিকিৎসককে

নিহত জান্নাতুলের স্বামী রেজাউল
নিহত জান্নাতুলের স্বামী রেজাউল  © সংগৃহীত

জন্মদিন পালনের কথা বলে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক জান্নাতুলকে হয় আবাসিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরকীয়া জেনে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে পান্থপথের একটি হোটেলে ওই চিকিৎসককে হত্যা করেন তারই স্বামী রেজাউল। নিহত জান্নাতুল মগবাজার কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রী ও গাইনি বিষয়ে কোর্স করছিলেন।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। ঘটনার পর কলাবাগান থানায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। র‍্যাব এ ঘটনার পর থেকেই ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং অপরাধীকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জান্নাতুলের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায় রেজাউল। সেই মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব আরও জানায়, রেজাউলের মোবাইল এবং সামাজিক আইডি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় কুরুচিপূর্ণ মানসিকতা এবং বিকৃত মানসিকতা ছিল। তার সাথে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক ছিল।

অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে অভিযুক্তের পরিচয় হয়। ২০২০ সালের অক্টোবরে তারা বিয়ে করেন। এরমধ্যে অভিযুক্তের সঙ্গে একাধিক নারীর সম্পর্ক আছে বলে জানতে পারেন ওই চিকিৎসক। বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক অভিযুক্তকে রেজাউলকে বিভিন্ন সময় কাউন্সেলিং বা তার সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। 

বুধবার (১০ আগস্ট) হত্যার উদ্দেশ্যে সে আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায় জান্নাতুলকে। তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছিল। (১২ আগস্ট) জান্নাতুলের জন্মদিন ছিল। জন্মদিন পালন করার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য তাকে সে হোটেলে নিয়ে যায়। হোটেলে রুমে ঢোকার পর তাদের মধ্যে কথাবার্তার তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে রেজা তার সাথে থাকা ব্যাগ থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে জান্নাতুলের শরীরে আঘাত করে। তাকে হত্যা করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে ধারালো ছুরিটি ব্যাগে কয়েকদিন ধরে বহন করে আসছিল রেজাউল।

আরও পড়ুন: ফেসবুকে ‘সুইসাইডের ঘোষণা দিয়ে’ নিখোঁজ শিক্ষার্থী

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হত্যার পর রক্তমাখা জামা পরিষ্কার করে হোটেলে গোসল সারে রেজাউল। পরে সেখান থেকে বের হয়ে চলে যায়। ধস্তাধস্তির কারণে সে হাতে কিছুটা আঘাত পায়। হোটেল থেকে বের হয়ে প্রাথমিকভাবে একটি ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিয়ে পরে সে চট্টগ্রামে চলে যায়। এক নিকট আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান নেয়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার থেকে কীভাবে বাঁচতে পারে সেজন্য আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করার চেষ্টা করে সে। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ, এমবিএ শেষ করে একটা বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেছিল রেজা। পরে সেখান থেকে চাকরি চলে যায়। বর্তমানে সে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো।

জিজ্ঞাসাবাদে রেজা আরও জানান, হোটেল থেকে বেরিয়ে প্রথমে মালিবাগে তার বাসায় যান। বাসা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে একটি হাসপাতালে গিয়ে তার নিজের হাতের ক্ষতস্থান সেলাই করান এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে চট্টগ্রামে গিয়ে মুরাদপুরে আত্মগোপন করেন। তিনি কীভাবে এ থেকে বাঁচতে পারেন তা নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগও করেন। এর মধ্যেই র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হন তিনি।

নিহত জান্নাতুল মগবাজার কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রী ও গাইনি বিষয়ে কোর্স করছিল।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence