এবার মেয়রকে কোপানোর নির্দেশ এমপির, ফোনালাপ ফাঁস
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২২, ০১:৪১ PM , আপডেট: ২০ জুলাই ২০২২, ০১:৪১ PM
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা উপজেলা চেয়ারম্যানকে এমপির মারধরের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বরিশালের এক এমপির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তার কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাদের ১ মিনিট ৯ সেকেন্ডের এই কথোপকথনের কল রেকর্ডে মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র কামাল খানকে ‘কুপিয়ে জখম’ করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়ার কথা উঠে এসেছে।
জানা গেছে, এমপি পঙ্কজ দেবনাথের সঙ্গে ওই কথোপকথনটি মেহেন্দিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামানের। তবে পঙ্কজ দেবনাথের দাবি, অডিও ক্লিপটি প্রতিপক্ষের সাজানো। কণ্ঠস্বর নকল করে ফেসবুকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ছড়ানো হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই কথোপকথনে এমপি পঙ্কজ দেকনাথ পুলিশ কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামানকে বলেন, ওইখানে মারামারি যা হয়েছে তো হইছে, ওই শালায় তো খারাপ। ওরা মারামারি করলে আমাদের লোকজনকে বলে দিয়েছি- রামদা লইয়া ওপেন শুড করতে। ফাইজলামি করলে কিন্তু সামনাসামনি কোপ খাইবে। আপনি কইয়া দেন যে, সিদ্ধান্ত হইছে- মেয়র সামনে পড়লে মেয়রকেও কোপাইবো। যে সামনে পড়বে, হ্যারেই কোপাইবো; কেমন!' ঠিক আছে, যে কোপ খাইছে সে তো খারাপ, নেশাখোর, অ্যাডিকটেড- তাই না! এনিয়া যেন মাতবরি না করে, বাড়াবাড়ি না করে। আমি পোলাপানরে রেডি হইতে কইছি যে তোরা রেডি হ, যা থাকে কপালে, যুদ্ধ হইয়া যাক একটা।
জানা যায়, গত ৪ জুলাই আওয়ামী লীগ কর্মী রাতুল চৌধুরীকে কুপিয়ে জখম করার পর মেহেন্দিগঞ্জে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি হামলার প্রস্তুতি নেয়। তখন রাত ৮টার দিকে এমপি পঙ্কজ পুলিশ কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এসব কথা বলেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ কর্মী রাতুল চৌধুরীকে কুপিয়ে জখম করার পর ওই রাতে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। তখন এমপি সাহেব আমাকে ফোন করেছিলেন। তবে এগুলো তাদের রাজনৈতিক বিষয়। একটি অডিও ভাইরাল হওয়ার কথা শুনেছেন বলেও জানান এই পুলিশ পরিদর্শক।
এ বিষয়ে এমপি পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, পুরো বিষয়টি ষড়যন্ত্র। আমার বদনাম করতে তালুকদার ইউনুস ও কামাল খানরা এসব ষড়যন্ত্র করছেন। আমার কণ্ঠস্বর নকল করে এই কল রেকর্ড ভাইরাল করা হয়েছে।
তবে মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন খান বলেন, পুরো বিষয়টি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি। এক প্রান্ত থেকে রামদা দিয়ে কোপানোর নির্দেশদাতা হচ্ছেন এমপি পঙ্কজ দেবনাথ। দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে তিনি এসব বলতে পারেন না। মেহেন্দিগঞ্জকে অশান্ত করতে এমপি পঙ্কজের প্রয়াস চলছেই। তিনি অস্ত্রের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরই ঘায়েল করতে চান।
এর আগে গত ১৬ জুলাই কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি কমিটির বৈঠকেই কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে মারধরের অভিযোগ উঠে। ঘটনার দিন বিকেলে সংসদ ভবনের এলডি হলে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনার সতত্য সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া যায়।