দ্রুত ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা চূড়ান্ত করার অনুরোধ ই-ক্যাবের

ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) নেতৃবৃন্দ
ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) নেতৃবৃন্দ  © ফাইল ফটো

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১’ বাস্তবায়নের অনুরোধ করেন ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) নেতৃবৃন্দ। রবিবার বিকেল ৪টায় সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় ই-ক্যাব প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার।

বিগত ডিজিটাল কমার্স পলিসি ২০১৮ এর বিধি অনুসারে ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে গঠন করা হয় ডিজিটাল কমার্স সেল এর উপদেষ্ঠা পরিষদ। চলতি বছর ফ্রেব্রুয়ারীতে খসড়া ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা-২০২১ বিভিন্ন সেক্টরের মতামতের জন্য প্রেরণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, ডাক বিভাগ, আইসিটি ডিভিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ও ই-ক্যাব নিজেদের মতামত তুলে ধরে।

গতকাল পূর্ব নির্ধারিত সভায় এসওপিএর বিভিন্ন বিষয়, বাজেটে ই-কমার্স, ইস্যু, ই-কমার্স সেক্টরের ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ ও সহযোগিতার অনুরোধ করেন ই-ক্যাব নেতৃবৃন্দ। নবনিযুক্ত বাণিজ্য সচিব মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দেন। এইসময় ডব্লিওটিওসেল এর মহাপরিচালক, ডিজিটাল কমার্স সেল এর প্রধান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ই-ক্যাব সভাপতি বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ই-ক্যাবের ভূমিকায় ই-কমার্স সেক্টরে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে। এই আস্থার সুযোগ নিয়ে কিছু সুযোগসন্ধানী মহল ই-কমার্সের নামে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করছে। তাই এসব রোধ করতে ই-কমার্স আইন প্রয়োজন। তারই প্রক্রিয়া হিসেবে দ্রুত ডিজিটাল কমার্স পলিসি বাস্তবায়ন করে সব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে অভিন্ন নিয়মের আওতায় নিয়ে আসলে বর্তমানে পন্যের মান ও ডেলিভারী সংক্রান্ত অনিয়মগুলো কমে আসবে’। এছাড়া তিনি সাময়িকভাবে ই-কমার্সকে উৎস করের আওতা বর্হিভূত রাখার দাবি জানান।


ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, ‘নির্দেশিকার বিষয়ে আমরা সদস্যদের সাথে আলোচনা করে আমাদের প্রস্তাবনা পেশ করেছি। এখন যত দ্রুত এটি বাস্তবায়ন হবে তত ক্রেতা সাধারণের জন্য ইতিবাচক হবে এবং আইন প্রণয়নের পথ সুগম হবে। এই সেক্টরের ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি ও ক্রেতারা আস্থা বৃদ্ধির জন্য এটা জরুরী হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আমরা বাজেটে সরকারের কাছে যেসব দাবী পেশ করেছি তার প্রতিফলন এবারের বাজেটে পড়েনি। তাই আমরা রাজস্ব বোর্ডকে আবারো অনুরোধ জানাবো এবং এই বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করছি।’
ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘দ্রুত ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা বাস্তবায়নের স্বার্থে সংশ্লিষ্ঠ পক্ষসমূহকে নিয়ে আলোচনায় বসা দরকার। এবং এটি চূড়ান্ত করে ঘোষনা ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এই সেক্টরে শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা জরুরী হয়ে পড়েছে’। এই এসওপি বাস্তবায়নে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।


ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক জনাব আব্দুল হক অনু বাণিজ্য সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘পণ্য সেবা ও ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো ভিন্ন ভিন্ন নীতি অনুসরণ করছে। ই-ক্যাবের নির্দেশনা তারা তোয়াক্কা করছেনা। এই মূহুর্তে আইন না হলে এসব প্রতিষ্ঠান থামানো যাবে না। আইনি প্রক্রিয়া যদি সময়সাপেক্ষ হয় তাহলে দ্রুত এসওপি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা দরকার। বাজেট প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেহেতু ট্রেড লাইসেন্স আইনে ই-কমার্স তালিকাভূক্ত হয়নি। তাই এই সেক্টর এখনো আইনগত স্বীকৃতি পায়নি’। আইনগত স্বীকৃতি না দিয়ে উৎসকরের আওতায় আনা যুক্তিযুক্ত নয় বলে তিনি বলেন।

ই-ক্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মতামমত নিয়ে ২০ মার্চ ২০২১ তারিখ তা আনুষ্ঠানিকভাবে এসওপি উপস্থাপন করেন ই-ক্যাব। পর ৭ দিনের মধ্যে ই-ক্যাব চূড়ান্ত প্রস্তাবনা পেশ করে। আশা করা যায় দ্রুত সভা আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশিকা চূড়ান্ত করবে এবং ডিজিটাল কমার্স আইন প্রণয়নের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করবে।


সর্বশেষ সংবাদ