‘জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না’
- ঝালকাঠি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০৩ PM , আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০৯ PM

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো কি না, তা আমরা জানি না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জামাল বলেন, আমরা দেখেছি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বকালীন দেশের রাজনীতিকরা পাকিস্তানের কাছে নিজেদের পরিবারকে সুসংগঠিত রেখে আত্মসমর্পণ করে পালিয়ে গিয়েছিল। যদি তখন নেতারা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ যুদ্ধের বক্তব্য দিত, তাহলে স্বাধীন হতে এত রক্তপাত হতো না। কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষমতার লোভে তখন শেখ মুজিব নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রেখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, তখন মেজর জিয়াউর রহমান ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’ বলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে একটি দেশবিহীন, নেতৃত্ববিহীন জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধের পর শেখ মুজিব ক্ষমতায় এসে একদলীয় শাসনতন্ত্র কায়েম করেছিলেন। ঠিক ১৭ বছর তারই কন্যা ফ্যাসিস্ট হাসিনা বাংলাদেশকে সেই একই অবস্থায় নিয়েছে।
একটি বিশেষ দলের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনারা গত ১৭ বছরের যে ষড়যন্ত্র দেখেছেন, এই ষড়যন্ত্র শুধু গত ১৭ বছরের হয়নি, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে একটি কুলাঙ্গার জাত, একটি কুলাঙ্গার রাজনৈতিক দল অবস্থান নিয়ে এ দেশের মানুষকে হত্যা করেছিল, মানুষের ইজ্জত নষ্ট করেছিল। ঠিক একইভাবে সেই রাজনৈতিক দলগুলো একতাবদ্ধ হয়ে ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচারী এরশাদের সঙ্গে একতা ঘোষণা করে শেখ হাসিনা এবং জামায়াত নির্বাচন করেছিল। আপসহীন থেকেছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী এরশাদের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশের মানুষের গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছর বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করতে দেয়নি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনবাহিনীর ওপর প্রথম আঘাত করেছিল। ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করে বাংলাদেশকে আবার ভারতের তাঁবেদার রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে চেয়েছিল। ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। ভারতে বসে এখনো শেখ হাসিনা সেই ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের সিমান্তে কাঁটাতারের বেড়া হচ্ছে। তারই দ্বারবাহুকতায় বাংলাদেশের সব ষড়যন্ত্র করছে। ১৭ বছর বাংলাদেশের সম্পদ লুট করে কীভাবে দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে।
নিজের এলাকার রাজনীতি নিয়ে জামাল বলেন, আপনারা বলেছেন রাজাপুরের কিছু কুলাঙ্গার সন্তান এই বিএনপির বিরুদ্ধে আবার ষড়যন্ত্র করে নাসিম আকনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। নাসিম আকন একা নয়, সবাই তার সঙ্গে আছে। আপনারা যারা ষড়যন্ত্র করছেন, যেভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, এই ষড়যন্ত্রকারীদের আশ্রয় হবে বঙ্গপোসাগরে। রাজাপুর-কাঁঠালিয়ায় কোনো ষড়যন্ত্রকারীর জায়গায় হবে না।
বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বলেন, বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজের জায়গা নেই। বিএনপিকে যারা ভালোবাসে, তারা দেশের গণতন্ত্রকে ভালোবাসে। শহীদ জিয়াউর রহমান এ দেশের রাষ্ট্রপ্রতি ছিলেন অথচ ঢাকা শহরে তার একটি বাড়ি নেই। কারণ জিয়াউর রহমান তার পরিবারের জন্য রাজনীতি করেননি, দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তার আর্দশ ধারণ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু ঢাকা শহরে একটি বাড়ি নেই। অথচ শেখ হাসিনার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বাড়ি আছে। তার পরিবারের নামে ১০টি প্লট ঢাকা শহরে কিন্তু জিয়া পরিবারের একটিও নেই।
রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তালুকদার আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং যুবদলের সদস্য সচিব সৈয়দ নাজমুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সায়েম আকন ও ছাত্রদলের সদস্য সচিব রফিক মৃধার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম উদ্দিন আকন, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল হক নান্টু, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুম বিল্লাহ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রতন দেবনাথ, কৃষক দলের সভাপতি মো. মাসুম হাওলাদার, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন রাব্বি, মহিলা দলের নেত্রী ফেরদৌসী ইয়াসমিন প্রমুখ।