‘জিয়ার সৈনিক হিসেবে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রশিদকে মারধরের ব্যাখ্যা দেন শাওন মোল্লা
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রশিদকে মারধরের ব্যাখ্যা দেন শাওন মোল্লা  © সংগৃহীত

বরগুনায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আব্দুর রশিদকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পর ফেসবুক লাইভে এসে তার কারণ জানিয়েছেন অভিযুক্ত শাওন মোল্লা।

তিনি বলেন, বয়স্ক একজনের সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। শহীদ জিয়ার একজন সৈনিক হিসেবে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি। তবে আমি কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করিনি এবং কোনো ভদ্রলোকের সঙ্গেও বেয়াদবি করিনি।

শাওন মোল্লা বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম ওরফে ফারুক মোল্লার ছেলে ও কেন্দ্রীয় সহশ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামানের চাচাতো ভাই।

গতকাল রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে তিনি ফেসবুক লাইভে শাওন মোল্লা বলেন, ‘আমি কোনো বয়স্ক লোকের সঙ্গে বেয়াদবি করিনি। আমি কেন আইন হাতে তুলে নিলাম বা কেন এমন আচরণ করলাম, তার উত্তর দিতেই এ ফেসবুক লাইভে আসা।...আবদুর রশিদ আমার দলের নেত্রী খালেদা জিয়া, আমাদের নেতা তারেক রহমান, আরাফাত রহমান সম্পর্কে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তাই শহীদ জিয়ার একজন সৈনিক হিসেবে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি। তাই বয়স বিবেচনায় একজনের...গায়ে হাত তোলা যদি অন্যায় হয়, তবে আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাই।’

শাওন আরও বলেন, ‘তথাকথিত কমান্ডার রশিদ ওরফে কালা রশিদ, ওরফে ডাকাত রশিদ, ওরফে ধর্ষক রশিদের মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিল না। উনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার হয়েছেন। তিনি নিজেও টাকার বিনিময়ে যাকে-তাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। তার অত্যাচারে বরগুনার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অতিষ্ঠ এবং সঠিক মুক্তিযোদ্ধারা লাঞ্ছিত-বঞ্চিত। উনি ডাকাত সর্দার, ভূমিখেকো, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি ও ভিডিও ফুটেজ আছে। সেগুলো আমি পরবর্তীতে আপনাদের সামনে তুলে ধরব এবং আইনের আশ্রয় নেব।’

এর আগে রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শাওন মোল্লা প্রকাশ্যে বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য আবদুর রশিদকে হেনস্তা করেন। এই হেনস্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমার নিজের কাজে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও বয়স্ক মানুষ। চেষ্টা করবো আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার। আমি অন্যায় করে থাকলে দেশে আইন-আদালত আছে। সেখানে আমার বিচার হবে। কিন্তু এভাবে আমার গায়ে কেউ হাত তুলতে পারে না।’

বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম বলেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রশিদ বরগুনায় পরিচিত একটি মুখ। তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি আমাদের পুলিশ সুপারের নজরে এসেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন, তাহলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ