এক দিনেই পালিয়ে বাংলাদেশে এলো ৫০০ রোহিঙ্গা

বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে অন্তত ৫০০ রোহিঙ্গা নাগরিক
বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে অন্তত ৫০০ রোহিঙ্গা নাগরিক  © সংগৃহীত

মিয়ানমার থেকে গতকাল শনিবার বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে অন্তত ৫০০ রোহিঙ্গা নাগরিক। এর আগে শুক্রবার কক্সবাজারের সীমান্ত দিয়ে এসেছে দুই শতাধিক। গত দুই সপ্তাহে উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে এসেছে কমপক্ষে আট হাজার রোহিঙ্গা।

এ ছাড়া মিয়ানমারের মংডুর মনিপাড়া, সিকদারপাড়া ও আইরপাড়া এলাকায় অন্তত ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে সংঘাত চলছে। এর মধ্যে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা বাংলাদেশে ঢুকে উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোয় আশ্রয় নিচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, নতুন করে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কাছে চাঁদাবাজির টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে এ গোলাগুলি হয়েছে।

মিয়ানমার থেকে শুক্রবার পালিয়ে ক্যাম্প-১-এ আশ্রয় নিয়েছেন মোহাম্মদ জাকের। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, স্ত্রী-সন্তানসহ পাঁচজন সীমান্তে দুদিন অপেক্ষার পর শুক্রবার কৌশলে পার হয়ে ক্যাম্পে এসেছেন।

শনিবার মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে ক্যাম্প-১-এর বি-ব্লকে আশ্রয় নিয়েছেন সাব্বির আহমেদ। তিনি জানান, তার দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে টেকনাফের জাদিমুড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। জীবন রক্ষার জন্য তারা সপরিবার পালিয়ে এসেছেন বলেও জানান এই রোহিঙ্গা।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, রাখাইনের মংডু টাউনশিপের বিপরীতে (পশ্চিমে) চার কিলোমিটার প্রস্থের নাফ নদী পেরোলেই বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা। রাতের অন্ধকারে মংডু টাউনশিপের সুদাপাড়া, ফয়েজীপাড়া, সিকদারপাড়া ও নুরুল্লাপাড়া গ্রাম থেকে রোহিঙ্গারা নৌকা নিয়ে নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। বেশির ভাগ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকছে জাদিমোরা, দমদমিয়া, কেরুনতলি, বরইতলি, নাইট্যংপাড়া, জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়াপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, ঘোলারচর, খুরেরমুখ, আলীর ডেইল, মহেষখালীয়াপাড়া, লম্বরী, তুলাতলি, রাজারছড়া, বাহারছড়া সীমান্ত ও উপকূল দিয়ে।

টেকনাফে আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার মাইন উদ্দিন বলেন, কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ঢুকে পড়েছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা যেন ঢুকতে না পারে, সে ব্যাপারে আশ্রয়শিবিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। অনুপ্রবেশের সময় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নাফ নদী থেকে পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে উখিয়ার কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হঠাৎ অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গত দুদিনে দুই রোহিঙ্গা গ্রুপের গোলাগুলিতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।

রোহিঙ্গা নেতা আলি হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ক্যাম্প-১৮-তে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে সাতজন আহত হয়। এর আগের দিন ক্যাম্প-১৫-তে আহত হয়েছে আরও আটজন।


সর্বশেষ সংবাদ