জাতীয় পার্টিকে বিশ্বাস করছেন না প্রধানমন্ত্রী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:২৯ AM , আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৪ AM
বেশিরভাগ বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় চাপ আছে সরকারি দলের উপর। এসময় জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসলেও জাতীয় পার্টিকে বিশ্বাস করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারে বলেও তিনি মনে করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব ও নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচন নিয়ে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন ভাগাভাগির প্রসঙ্গ ওঠে। কয়েকজন মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, জাতীয় পার্টিকে বিশ্বাস করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, জাতীয় পার্টি কখন কী করে, তার ঠিক নেই। ওরা (জাতীয় পার্টি) নির্বাচনে থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে।
এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে নিয়ে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পেয়ে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, রংপুর-১ আসনের এমপি মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং রংপুর-৩ আসনের এমপি রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এ সময় বলা হয়, জি এম কাদেরের নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই তারা জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পাননি।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, তৃণমূল পর্যায়ে দলের শীর্ষ নেতা বিশেষ করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে কেউ কেউ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এমনকি কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীর আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। বেশির ভাগ আসনেই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ফলে কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়েছেন। দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা প্রতিদিনই বাড়ছে। এসব নিয়ে দলের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থায় কয়েকজন মন্ত্রী গতকাল বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর মধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এখনও নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন, তাদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু এই অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। অন্যসব রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সক্রিয় থাকার জন্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। ফলে এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে সরকারি দলেও। এ অবস্থায় ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আসনেই দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।