‘বিড়ালের মাংস দিলে সেটা প্রমাণ করেন, ১০ হাজার টাকা কেন দেব?’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩, ০৫:৪০ PM , আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:০৮ PM
জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানির মাংস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কনক রহমান খান নামের একজন ভোক্তা। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেন। যা পরে ভাইরাল হয়। এবার বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষ। যে ভোক্তা তাদের খাবার নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, গণমাধ্যমের কাছে ওই ভোক্তার অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে তার বিরুদ্ধে পাল্টা টাকা দাবির অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার আশরাফুল আলম।
আশরাফুল আলম বলেন, সেদিন তারা সরাসরি এসে খাবারটা নিয়ে যান। তারা একটি ব্যাংকে কর্মরত। এখান থেকে সাতটা হাফ কাচ্ছি নিয়ে যান। নিয়ে যাওয়ার আধাঘণ্টা থেকে ৪০ মিনিট পর তারা ফোন করে বিষয়টি আমাদের জানান। ফোন দিয়ে আমাদের একজনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেন। তারা ফোন করে বলেন, ‘আপনারা বাটপাড়ি ব্যবসা করেন, খারাপ ব্যবসা করেন। আপনারা এই ধরনের খাবার কিভাবে দেন।’
‘‘আমি তাদের সঙ্গে কথা বলি। তারা (যারা কাচ্চি নিয়ে গিয়েছিলেন) আমাকে বলেন, ‘ওই ব্যাটা, তরা বাটপাড়ি ব্যবসা করস। তরা খাবারে এসব দেস।’ আমি তাকে জিজ্ঞেস করি কী দেই? তারা বলেন, ‘তরা হাতি-ঘোরা কী দেস! বিড়ালের মাংস দেস।’ বিষয়টি আমি তাদের বুঝিয়ে বলি। আমি তাকে বলি, ‘আপনারা চাইলে আমাদের রান্নাঘর পরিদর্শন করতে পারেন। এসে দেখেন আমরা কিভাবে খাবারটা প্রক্রিয়া করি।’’
তিনি বলেন, আমাদের খাসিগুলো ছয় কেজি থেকে সাড়ে ছয় কেজি, আট কেজি বা ৯ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। এর বেশি হতে পারে না। কারণ খাসি এর থেকে বেশি বড় হলে গোশত সিদ্ধ হবে না। এমন বেশি ওজনের খাসি দেওয়া যাবে না। আমাদের ম্যানেজমেন্ট থেকেই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
যারা কাচ্চি নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের আবার খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করে সুলতান’স ডাইন- এমনটি জানিয়ে আশরাফুল আলম অভিযোগ করে বলেন, খাবার নিয়ে যেতে যেতেই আবার ফোন করে তারা। তারা আমাকে হুমকি দেয়। বলে, ‘আমি কী এটা ভাইরাল করে দেব। র্যাবকে ফোন করে কি ধরিয়ে দেব?’
আরও পড়ুন: ‘সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি নিয়ে প্রশ্ন’, বিষয়টি আসলে কী
আশরাফুল আলমের দাবি, ‘খাবার নিয়ে কিছুক্ষণ পরে সেখানে যান আমাদের কয়েকজন। যাওয়ার পর তারা কয়েকজন মিলে আমাদের লোকদের টর্চার করেন। সেখানে আমিও যাই। গিয়ে বিষয়টা বোঝানোর চেষ্টা করি। তাদের বলি, আপনারা চাইলে মাংসাটা ল্যাবেও পরীক্ষা করাতে পারেন। কিন্তু তারা আমাদের চাপ দিতে থাকেন।’
যারা কাচ্ছি নিয়ে গিয়েছিলেন তারা টাকা দাবি করেন জানিয়ে আশরাফুল আলম বলেন, তারা আমাকে র্যাব-দুদকের হুমকি দেখায়। তারা আমাকে যুবলীগের হুমকি দেখায়। একজন মহিলা এসে বলছেন, ‘র্যাবকে খবর দেওয়া হয়েছে। র্যাব আসছে। এদেরকে ধরিয়ে দেও।’
‘‘তারপর আমাকে তাদের বাসার নিচে যেতে বলেন, নিচে যাওয়ার পর একজন আমাকে বলেন, ‘কী করবেন এখন বলেন?’ আমি তাকে বলি, কী করতে হবে বলেন, সেটা আমি করব। তখন তিনি বলেন, ‘১০ হাজার টাকা দেন।’ আমি তাকে বললাম, ১০ হাজার টাকা দেব কেন ভাই? আমি খারাপ খাবার দিয়েছি? আমি যদি বিড়ালের মাংস দিয়ে থাকি সেটা বলেন? প্রমাণ করেন! আমি তো টাকা দেব না।”
কয়েকজন তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে জানিয়ে সুলতান’স ডাইনের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার আশরাফুল আলম বলেন, ‘ইজ্জতের ভয়ে আমি চলে আসি। তারপর ম্যানেজারকে জিম্মি করে রাখে। একটি ক্লাবে আটকে রেখে আমাদের ফোন করে। সন্ধ্যার দিকে তারা ম্যানেজারকে ছেড়ে দেয়। আমরা এ নিয়ে কিছু বলিনি। এই ঘটনার পর আমাদের নামে দুর্নাম ছড়ানো হচ্ছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’