বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক, মেনে নেওয়া হোক

পেনশন স্কিম নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

জাভেদ রায়হান, আলিম খান ফারহান, মোতালেব হোসাইন ও আবির চন্দ্র
জাভেদ রায়হান, আলিম খান ফারহান, মোতালেব হোসাইন ও আবির চন্দ্র  © টিডিসি ফটো

চালু হচ্ছে নতুন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’। নতুন  এই পেনশন ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহার দাবিতে পহেলা জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে অচল হয়ে পড়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। নতুন পেনশন স্কিম 'প্রত্যয়'  নিয়ে কি ভাবছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পোসের হাবিপ্রবি প্রতিনিধি রিয়া মোদক


দ্রুত সমাধান না হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভয়াবহ সেশনজটের আশঙ্কা

বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়। শিক্ষকরা যেন পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারেন এবং পরবর্তী প্রজন্মকে দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন তার জন্য তাদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দেয়া উচিত। সার্বজনীন পেনশনের ক্ষেত্রে সরকারি ক্যাডারদের জন্য ‘সেবক’ এবং শিক্ষকদের জন্য আলাদা করে ‘প্রত্যয় স্কিমের’ যে নতুন প্রজ্ঞাপন ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্য হয়েছে। 

তবে এই প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা যে কর্মবিরতি পালন করছে তাতে করে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এভাবে চলতে থাকলে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়াবহ সেশনজটের সৃষ্টি হবে। আমি আশা করবো সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের সাথে এই বিষয়ে দ্রুত আলোচনা করে এর সমাধান করা হবে।

জাভেদ রায়হান, শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় 

সরকারের সাথে আলোচনায় বসে শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনার আহ্বান

সরকার যে প্রত্যয় পেনশন স্কিম চালু করেছে সেইটা আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কিছু হবে।  যেহেতু সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একটি টেকসই পেনশন ব্যবস্থায় আনার জন্যই এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে যার ফলে রিকশা চালক থেকে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ এই সুবিধাগুলা পাবে। কিন্তু এ স্কিমে বৈষম্যমূলক দাবি করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বাতিলের দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছে যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। 

ক্লাস,পরীক্ষা বন্ধ থাকার কারণে দীর্ঘ হচ্ছে সেশনজট। এতে ভোগান্তি বাড়ছে শিক্ষার্থীদের। তাই সরকারের উচিত দ্রুত শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনা যাতে করে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের আর ভোগান্তিতে পড়তে না হয়।

আলিম খান ফারহান, শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ।

আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানের দাবি

ঈদ ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশের দীর্ঘ ছুটির পর আবারও ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় তৈরি হয়েছে সেশনজটের আশঙ্কা। ইতিমধ্যে গবেষণা ও শিক্ষায় অধিকতর সুযোগ সুবিধা পাওয়ায় জন্যে মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশ ছাড়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। এমতাবস্থায় যদি শিক্ষক ও গবেষকদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে মেধাবীরা শিক্ষকতা ও গবেষণায় আসতে আগ্রহী হবেন না যার ফলে দেশের উচ্চ শিক্ষা ভেঙে পড়বে বলে আমি আশঙ্কা প্রকাশ করছি। 

এমতো অবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাদের সকল আন্দোলন প্রতি শিক্ষার্থী হিসেবে আমি সমর্থন জানাচ্ছি। লম্বা সময় ধরে শিক্ষকদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার পরই সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। যেহেতু হঠাৎ করে নেওয়া এ বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত শিক্ষকরা  প্রত্যাখ্যান করেছে  সুতরাং সরকারের উচিত শিক্ষকদের দাবিগুলোকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। অন্যথায় দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা অপরিকল্পনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

মোতালেব হোসাইন , শিক্ষার্থী, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষার স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার দাবি

সার্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এনে ভোগান্তির স্বীকার দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। বর্জন করেছেন ক্লাস পরীক্ষা, যার জন্য চরম ভোগান্তির শিকার আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ঘরের শিক্ষার্থীরা। কেননা যেখানে ৪ বছরের অনার্স ৫ বছরেও শেষ হচ্ছে না।

করোনা মহামারি আমাদের জীবনকে প্রায় ২ বছর পিছিয়ে দিয়েছে সেই জটই আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তবে শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই। তবে বারবার আমরা শিক্ষার্থীরাই কেনো এমন বৈষম্যের শিকার? আমাদের চাকরির বয়স কি দিন দিন বাড়বে?

আবির চন্দ্র, শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

 

সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence