জাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দ্বারা মবের শিকারের অভিযোগ কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতার

  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নাকিবুল ইসলাম চৌধুরী জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন "আমরা এর আগে এসে মবের শিকার হয়েছি।" গতকাল সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) জাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় টিম কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি গঠনের লক্ষে কর্মী সভায় বক্তব্য প্রদানের সময় তিনি এ কথা বলেন।

এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, 'যেহেতু আমরা পূর্বে জেনেছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। এমন একটা সার্কুলার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দিয়েছে। আমরা যখন এসেছিলাম তখন কোনো মিছিল ছিল না, বাইকের শোডাউন ছিল না। শুধু আমরা তিনজন এসে ভিসি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ এবং আমাদের বিষয় তাদের জানাতে এসেছিলাম। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা কেন পলিটিক্স চায় না সে বিষয়ে জানতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু আমরা ঢোকার পরে তেমন কোনো কাজই করিনি উল্টো আমরা ভিসি মহোদয়ের রুমে অপেক্ষা করছিলাম তখন নিচে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান হচ্ছিল। এক পর্যায়ে তাঁরা উগ্রভাবে ভেতরে ঢুকে গেছে এবং পরবর্তীতে ভিসি স্যারের মিটিং রুমেও আমাদের ওখানে ঢুকে গেছে। সুতরাং আমার কাছে মনে হয়েছে যে ওই সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে যে সকল শিক্ষার্থী বৃন্দ কথা বলেছে তা আমাদের সাথে অন্যায় করেছে। বিগত দিনের এ কাজের চিত্র মবের মতোই ছিল।'

গত বুধবার (৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে গণসংযোগ করতে এসেছিলেন সহসভাপতি হাফিজুর রহমান সোহান, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নাকিবুল ইসলাম চৌধুরী ও আব্দুর রহিম রনি। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের এমন প্রবেশের কারনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবন যায় এবং বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের তিনজনকে বেরিয়ে যাওয়ার দাবি জানায় যায়। পরে উপাচার্য,  শিক্ষার্থী, ছাত্রদল নেতাদের কথ হয়। কথা শেষ তারা চলে যায়।

এসময় ছাত্রদলের তিন নেতার মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহান বলেছিলেন, 'শিক্ষার্থীরা আমাদের বলেছে তারা শিক্ষার্থী বান্ধব বা লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির কোনটাই পছন্দ করেন না। যারা এখানে থাকবেন তারা শিক্ষার্থীদের জন্য কথা বলবেন। আমাদের যে বর্তা ছিল তাদের দিয়েছি। তারাও তাদের মতামত দিয়েছে। তাদের আচরণে আমরা খুবই খুশি।'

সেদিন আচরণে খুবই খুশি হয়েছি বললেও একই বিষয়কে হঠাৎ মবের শিকার হয়েছি বলে অভিযোগ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুর দুর্জয় ক্ষোভ প্রকাশ করে  বলেন, "তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাদের সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। তারই ধারাবাহিকতায় ৫ আগষ্টের পরে অফিস আদেশের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর একদিন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা ক্যাম্পাসে এসে রাজনীতির প্রচারণা চালাতে চায়, তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রথমে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তাঁরা না মানলে শিক্ষার্থীরা ভিসি স্যারের সমানেই জোর দিয়ে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তারা সেদিন স্বীকার করে গিয়েছে সুষ্ঠু ও  একটা আলোচনা হয়েছিলো এবং সেখানে কোন অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি সে বিষয় টি মব জাস্টিসের দাবি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।"

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক রিয়াদ হাসান বলেন, "আমি এখানে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ঐদিন সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো মব করে নাই বরং ওই ঐদিন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ক্যাম্পাস এ ঢুকা হয়েছিলো এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের মাধ্যমে বারবার উনাদের বের হয়ে যেতে বলার পরও সেই দলীয় প্রভাব খাটিয়েই ভিতরে বসে ছিলো। আমরা এই দলীয় প্রভাব এর রাজনীতি আগেও দেখেছি। তখন আমরা কিছু বলতে পারি নাই। কিন্তু ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখি। এলাকার অনেক স্থানীয় নেতাকর্মী ঐদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট এ অবস্থান নিয়েছিলো এবং পরবর্তীতেও আমিসহ  আমাদের অনেক শিক্ষার্থী এই ঘটনার জন্য হুমকির স্বীকার হয়েছি।"


সর্বশেষ সংবাদ