হল ছাড়বেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, ক্যাম্পাসে অবস্থানের ঘোষণা

হল ছাড়বেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা
হল ছাড়বেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আন্দোলনের জের ধরে অনির্দিষ্টকালের জন্য চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য জানানো হয়। 

এদিকে, ছাত্রদের আজ বিকাল ৫টার মধ্যে ও ছাত্রীদের আগামীকাল সকাল নয়টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তারা শাহ আমানত পরিবহনের আটকে রাখা দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে।

চুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ সাড়া না দেওয়ায় চুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সকাল থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনে কাপ্তাই সড়কে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টায়, শিক্ষার্থীরা একটি প্রেস ব্রিফিং করে তাদের দাবিসমূহ তুলে ধরে। তারা চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়ককে প্রশস্ত করে চার লেন করার দাবি জানানো হয়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবিও জানান।

এ সময় তারা তাদের আন্দোলনকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আখ্যায়িত করেন এবং স্থানীয় জনগণকে এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানান। পাশাপাশি দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে পাশে থাকার আহ্বানও জানানো হয়।

বিক্ষোভের জের ধরে বেলা ১টা নাগাদ একাডেমিক ভবন-৩-এর সবকটি বিভাগ, একাডেমিক ভবন-২-এর যন্ত্রকৌশল বিভাগ এবং তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান ফটকে তালা দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। দুপুর ২টা নাগাদ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানায় শিক্ষার্থীরা। 

চলমান আন্দোলনে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ভিসি বিল্ডিংয়ের নিচে টায়ারে আগুন ও উপাচার্য দপ্তরের ভবনে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত সোমবার বিকেলে রাঙ্গুনিয়ার পোমরা শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাওফিক হোসেন। বাসের ধাক্কায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় চালক ও হেলপারকে আসামি করে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাসের চালককে গ্রেপ্তার করলেও হেলপারকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

সোমবার রাত থেকে শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে অবরোধ করে রাখে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন উত্তর চট্টগ্রামের দুটি উপজেলা, পার্বত্য রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলাগামী যাত্রীরা। শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। অনেককে হেঁটে গন্তব্য রওনা দিতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার রাতে অবরোধ স্থগিত করলেও বুধবার সকাল থেকে সড়কটিতে অবস্থান নিয়ে টানা অবরোধ করে আসছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ