ভিসিকে অবরুদ্ধ করলেন কর্মচারীরা, উদ্ধার করলেন শিক্ষার্থীরা

ভিসিকে উদ্ধারের মুহ
ভিসিকে উদ্ধারের মুহ  © টিডিসি ফটো

দুইদিন ধরে অবরুদ্ধ থাকা মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেনকে উদ্ধার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে মাভাবিপ্রবির একদল শিক্ষার্থী উপাচার্য  ড. মো. ফরহাদ হোসেনকে তার কার্যালয় থেকে উদ্ধার করেন।

জানা গেছে, মাভাবিপ্রবিতে এডহকে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির ২২ জন কর্মচারী তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে তিনি সেখানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা কর্মচারীদের তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ করলেও তারা তালা খুলে দেননি। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তারা উপাচার্যকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। সব বাঁধা অতিক্রম করে শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে উপাচার্যকে উদ্ধার করেন।

এর আগে গত ৩০ অক্টোবর তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিসি বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা দাবিগুলো হলো- তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরবর্তী বাছাই বোর্ডসমূহ দেওয়ার অনুরোধ;  বিজ্ঞপ্তিতে পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া; অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের শুধুমাত্র মৌখিক বোর্ডের ব্যবস্থা করা; বিজ্ঞপ্তিতে ১৫টি পদের বিপরীতে ২২ জন এডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের অসামঞ্জস্য পদকে সামঞ্জস্য করে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা; যথাসময়ে তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের আপগ্রেডেশনের ব্যবস্থা করা; চালকদের অধিকাল ভাতাসহ টিএডিএ দেওয়া; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য পৃথক মিনিবাসের ব্যবস্থা করা;  তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ টাঙ্গাইলের লোকদের নিয়োগ দেওয়া; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের নিয়োগে পোষ্যকোঠা নির্ধারণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য মোটর কার ও মোটরসাইকেলের জন্য কর্পোরেট লোনের ব্যবস্থাকরণ; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির জন্য একটি কার্যালয়ের ব্যবস্থাকরণ; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রেশিও অনুযায়ী গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাকরণ; বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িচালক ও কারিগরি কর্মচারীদের দাপ্তরিক সাজ-পোশাকের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের পরিপত্র এবং বাংলাদেশের গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থাকরণ; বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কোনো চাকরিজীবী চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে মৃত কর্মচারীর পরিবার থেকে একজনকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো যৌক্তিক নয়। তারা যে দাবিগুলো জানিয়েছেন সেই দাবিগুলো কোনোভাবেই মানা সম্ভব নয়। এছাড়া তারা অন্যায়ভাবে আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখে রাষ্ট্রের ও আমার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণ করেছে।


সর্বশেষ সংবাদ